পাহাড়ের খাসা সবুজ চা-বাগানের মাঝখানে আজ এক সরস ও রঙিন উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল। কেক কাটা, নাচ, গান এবং শিশুর উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চাম্পারায় প্রাক-বড়দিনের এক বিশেষ উপলক্ষ্য উদযাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় এই ঝাকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা ইস্লামপুর ইউনিয়নের মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প। তিনশোর বেশি শিশুর অংশগ্রহণে এই সুন্দর পরিবেশ অত্যন্ত উৎসাহ ও আনন্দের সাথে পরিচালিত হয়।
সকাল থেকেই চাম্পারায় প্রকল্পের প্রাঙ্গণ রঙিন সাজে সজ্জিত হয়। বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস ট্রি, রঙিন বেলুন ও ঝালর দিয়ে সাজানো এই আয়োজনের স্থানটি শিশুদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে। প্রাক-বড়দিনের এই উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় বড়দিনের বিশেষ কেক কাটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এরপর স্বেচ্ছাসেবী শিশুরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও বড়দিনের গান পরিবেশন করে। ছোট ছোট শিশুর নাচ ও গানের সুর পুরো বাগানটি এক উৎসবমুখর পরিবেশে পরিপূর্ণ করে তোলে।
এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প, চাম্পারায়। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের চেয়ারম্যান সাজু মারছিয়াং এবং সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) রনি দাস। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাম্পারায় চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রাহেল রানা। অনুষ্ঠান শেষে শিশুদের হাতে সম্মাননা স্বারক তুলে দেন অতিথিরা, যার মাঝে ছিলেন শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের শিশুরা, চ্যারিটেবল ট্রাস্ট অফ সিলেট প্রেসবিটারিয়ান সিনডের চেয়ারম্যান যাকব কিস্কু প্রমুখ।
অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইসলামপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, চাম্পারায় চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ খান, বিডি-০৪১৮ বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি শংকর বোনার্জী, ইউপি সদস্য সজয় কিশোর যাদব, চাম্পারায় প্রেসবিটারিয়ান মণ্ডলির ডিকন সানু বিশ্বাস ও অন্যান্য এলসিসি সদস্যরা। আলোচনা সভা শেষে প্রকল্পের ৩৩৬ জন শিশুর ও ১৫ জন নারীর মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
এই আনন্দমুখর অনুষ্ঠানের অর্থায়ন করেছে কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং সহযোগিতা করেছে চ্যারিটেবল ট্রাস্ট অফ সিলেট প্রেসবিটারিয়ান সিনড। অনুষ্ঠানে শিশুদের পরিবেশনায় নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়। এ ছাড়া সকলের মঙ্গল কামনা করে বড়দিনের আগাম শুভেচ্ছাও জানানো হয়। উদ্বোধনী ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে শিশুরা তাদের প্রতিভা প্রকাশের সুযোগ পায়, যা যেনো সত্যিই এক অনন্য অনুভূতির মুহূর্ত। এই পবিত্র উৎসবের মধ্য দিয়ে একসাথে সুখ, আলো ও ভালোবাসার আলেপ এক বিশাল শুভেচ্ছা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়।





