সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৪ই পৌষ, ১৪৩২

বাজার মূলধন হাজার কোটি টাকা বাড়লেও লেনদেন কমলো

গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমলেও বাজার মূলধন দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিনিয়োগকারদের জন্য আশাব্যঞ্জক খবর। দেশের শেয়ারবাজারের প্রধান দুই পত্রিকা সপ্তাহজুড়ে বিশ্লেষণ করে দেখেছে, লেনদেনের তুলনায় বাজারের মূলধন অনেক বেশি বেড়েছে। গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসের মধ্যে দুই দিন শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিললেও অন্য দুই দিন দরপতন হয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান শেয়ার দামে ব্যাপক উন্নতি করেছে। এর ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন শতকোটি টাকা করে বেড়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে সূচকেও এসেছে বাড়তি কিছু পয়েন্ট। তবে একথা লক্ষ্য করা গেছে, দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের মতো বেশি থাকেনি।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনুযায়ী, ২৪১টি কোম্পানি শেয়ার দামে বাড়তি লাভের দেখা পেয়েছে। অন্যদিকে, ৪৪টি কোম্পানি শেয়ার দর কমিয়ে দিয়েছে এবং ১০১টি প্রতিষ্ঠান অপরিবর্তিত রয়েছে। এর অর্থ হলো, মোট লেনদেনে অংশ নেওয়া ৬২.৪৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেয়ারদরে এই উ ↑ত্থান-পতনের মাঝেও, পুরো সপ্তাহজুড়ে বাজারের মূলধনে বড় ধাক্কা না লাগলেও, প্রথমদিকে লেনদেনের পরিমাণ কমে যাবে বলে অনেকে ধারণা করেছিলেন। তবে, সপ্তাহ শেষে দেখা গেল, ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের তুলনায় ১ হাজার ৭ কোটি টাকা বা ০.১৫ শতাংশ বেশি।

এসবের পাশাপাশি ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সও সপ্তাহজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। সূচকটি বেড়ে গেছে ৫২.১৬ পয়েন্ট বা ১.০৮ শতাংশ। অন্য দুই সূচক থেকে দেখা গেছে, ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক বেড়েছে ৭.৮৬ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ, এবং ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ২২.৬৯ পয়েন্ট বা ১.২২ শতাংশ।

অথচ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের তুলনায় কমে গেছে। গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৩৫৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের প্রতিদিন গড়ে ৩৮৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চেয়ে ২৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা কম। অর্থাৎ, এক দিনে গড় লেনদেনের পরিমাণে প্রায় ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ হ্রাস ঘটেছে।

বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারে, যেখানে দৈনিক গড়ে লেনদেন হয়েছিল ১৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের প্রায় ৪.৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সায়হান কটনের শেয়ার, যেখানে গড়ে প্রতিদিন লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, যার দৈনিক লেনদেন গড়ে ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

সব মিলিয়ে, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারের বড় বা জনপ্রিয় কিছু প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের তালিকায় শীর্ষে ছিল ব্যাংকিং, স্টিল, ফুড ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের কোম্পানি। এদিকে, সামগ্রিক অর্থনীতির দিকে তাকালে বোঝা যায়, বিনিয়োগকারীরা বাজারে আস্তে আস্তে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা ভবিষ্যতে আরও বিকাশের সম্ভাবনা দেখাচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন