জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অভ্যন্তরে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অসন্তোষের মধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিলেন দলটির অন্যতম প্রভাবশালী নেত্রী ও যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম। তিনি জানান, নির্বাচনের সময়ে দলটির বিভিন্ন কার্যক্রম থেকে নিজেকে ‘নিষ্ক্রিয়’ করে রাখতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই ঘোষণা আসলো রবিবার রাত ১১টার দিকে তাঁর নিজ ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক দীর্ঘ বার্তার মাধ্যমে।
নুসরাত তাবাসসুম তাঁর পোস্টে দলটির প্রতিষ্ঠার başlangিকালীন স্বপ্ন ও প্রত্যাশার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, শুরুতে এনসিপি গণতন্ত্রের সুষম চর্চা, আধুনিক বন্দোবস্ত, মধ্যপন্থা ও ‘বাংলাদেশপন্থা’র মতো মূল লক্ষ্য নিয়ে পথচলা শুরু করেছিল। দলটির ঘোষণাপত্র ও লিটারেচার তাঁকে নতুন ধরনের রাজনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিল। তবে, মাত্র দশ মাসের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ ১০ দলের জোটে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্বের নীতিতে তিনি বিচ্যুতির সূচনা দেখেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের প্রার্থীতালিকা ঘোষণার পরও শেষ মুহূর্তে জোটের সিদ্ধান্তের কারণে নেতাকর্মীদের আস্থা ও প্রত্যাশার ওপর জল ঢেলে দেওয়া হয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এক ্কতরফাভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও পরে জোটের সিদ্ধান্তে সেটি পরিবর্তিত হয়, যা তিনি মানতে পারেননি। তাই, স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণার অপকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তিনি নিজেকে নির্বাচনকালীন সব দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছেন এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শীঘ্রই চূড়ান্ত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নুসরাত তাবাসসুম আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ১৩ নভেম্বর দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু ১০ ডিসেম্বর দলটির ঘোষণা অনুযায়ী মনোনীত প্রার্থীর তালিকায় তাঁর নাম ছিল না। মনোনয়ন না পাওয়া এবং জামায়াতের সঙ্গে জোটের প্রক্রিয়া দেখে তিনি গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এই ঘটনাগুলোর মধ্য দিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থাহীনতা প্রকাশ পায়। এর আগে দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের পদত্যাগের পর এই নিষ্ক্রিয়তা ঘোষণা দলটিতে নতুন সাংগঠনিক সংকট সৃষ্টি করেছে। মূলত, দলটি এখন আদর্শিক দিক থেকে মেরুকরণের যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা স্পষ্টতই চোখে পড়ে।





