বুধবার, ৩১শে ডিসেম্বর, ২০২৫, ১৬ই পৌষ, ১৪৩২

বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শেখ হাসিনার শোক: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদান অপরিসীম

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা এক শোকবার্তায় দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর জীবনের উজ্জ্বল রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ও অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বেগম খালেদা জিয়ার অবদান অসীম। এই শোকবার্তা মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) শেখ হাসিনার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদ দেশবাসীর জন্য অপূরণীয় এক ক্ষতি। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে তিনি সরকার পদত্যাগ করেন এবং এর পর থেকে বিদেশে আশ্রয় গ্রহণ করেন। এটি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে এই ধরনের প্রথম বড় ধরনের আনুষ্ঠানিক শোকবার্তা। রাজনীতিতে স্বত্বেও, দেশের ইতিহাসে এক শোকের মুহূর্তে এই ইতিবাচক ও মানবিক প্রতিক্রিয়া ও খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আবেগঘন শোকবার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, “আমি তাঁর বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। প্রার্থনা করি আল্লাহ যেন তাঁর পরিবার এবং বিএনপির সকলে এই আঘাত সহ্য করার শক্তি দেন।” এই মৃত্যু দেশের দুই শীর্ষ নেত্রীর মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক বিরোধের অবসান ঘটিয়ে নতুন এক দিক নির্দেশনা সৃষ্টি করেছে।

উল্লেখ্য, লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ নানা বার্ধক্যজনিত সমস্যা সঙ্গে লড়াই করে আজ সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭৯ বছর বয়সে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকেই তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার রাতে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে হাজির হন। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টার পর, মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন তার চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

বেগম খালেদা জিয়া ৮০ এর দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী হিসেবে পরিচিত, ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তিনি দীর্ঘ ৪১ বছর বিএনপির নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দুইবারের সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী। বিশ্লেষকরা বলেন, হার স্বীকার না করে, জুলুমের মুখেও তিনি দেশের বাইরে যাননি, যা তাঁকে চির স্মরণীয় করে রাখবে। তাঁর মৃত্যুর মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক কাঠামোর এক শক্তিশালী স্তম্ভ ভেঙে গেছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন