নতুন বছর আসার শুভ সম্ভাবনায় মৌলভীবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো গত দুই সপ্তাহ ধরে পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে। শীতের কনকনে থেমে না গেলেও, সবুজের অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। মৌলভীবাজারের চায়ের রাজ্য এই জেলাটির প্রাকৃতিক নৈসর্গ দেখে পর্যটকদের মন ভরে যায়। এ বছরও জেলার জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পদচারণা লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, প্রিয় মাধবপুর লেক, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত, হামহাম জলপ্রপাত, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-ঐতিহ্যের প্রতীক বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ-সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতি সৌধ, শ্রীমঙ্গলস্থ চা বাগান, ইতিহাসের গহ্বরে ডুবে থাকা বধ্যভূমি, মাধবকুণ্ডের জলপ্রপাত এবং শমশেরনগর গল্ফ ক্লাব—এসব দর্শনীয় স্থানে পর্যটকদের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকরাও এসছেন। শীতের এই মৌসুমে ডিসেম্বর মাসে এই জেলায় সর্বোচ্চ পর্যটক আগমন হয়। পর্যটকরা জিপ বা চান্দের গাড়ি নামে স্থানীয় যানবাহন দিয়ে শহর ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে টিকিট কাউন্টার থেকে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১০ হাজারের বেশি পর্যটক এখানে প্রবেশ করেছেন, যার মধ্যে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। জানুয়ারি ২০২৬ সালের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যটনের এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বিশেষ নিরাপত্তা টিমের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক নজরদারি চালানো হচ্ছে। এতদিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা হয়নি এবং পর্যটকরা নিরাপদে তাদের ভ্রমণ উপভোগ করছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শীতকালীন এই সময়ে পর্যটন ব্যবসা খুবই লাভজনক হয়েছে। প্রতি বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এই অঞ্চলে প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক নজমুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মৌলভীবাজার অনেকবার এসেছি। এই বছর পরিবারের সাথে এসেছি। এখানকার সবুজ পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। অনেক পর্যটন কেন্দ্র একসঙ্গে দেখা যায়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য আরও ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া দরকার। এর মধ্যে রয়েছে পর্যটকদের জন্য সহজ যাতায়াতের ব্যবস্থা।’
শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশ অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘নিরাপদে পর্যটকদের চলাচলের জন্য আমরা জেলার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছি। এই এলাকায় সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ কেন্দ্রীক। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সব পর্যটন স্পটে বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।’





