দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের ‘গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ড’ এ অনুষ্ঠানটি ছিল ফুটবল বিশ্বের সেরাদের জন্য এক বিশেষ মহড়া। এই জমকালো আসরে আলোচিত ছিলেন ফরাসি তারকা উসমান দেম্বেলে, যিনি তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নিজেকে ফুটবলের শীর্ষে নিয়ে এসেছেন। প্রথমবারের মতো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় সম্ভব করে দেন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড, যেখানে কিলিয়ান এমবাপ্পে ও অন্য তারকাদের পেছনে ফেলে তিনি ‘সেরা পুরুষ খেলোয়াড়’ হিসেবে নির্বাচিত হন। ব্যালন ডি’অর ও ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কার অর্জনের পর এই গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ডে মর্যাদা পেয়েছেন তিনি। গত মৌসুমে ৩৫টি গোল করার পাশাপাশি প্যারিস সেন্ট জার্মেইন (পিএসজি) দলের হয়ে মোট ছয়টি ট্রফি জিতেছেন, যা তার ক্যারিয়ারকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। এই অর্জনে তিনি ২০২৫ সালকে তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বছর হিসেবে রূপান্তর করেছেন।
অপরদিকে, বার্সেলোনার তরুণ বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামালও এই অনুষ্ঠানে আলো ছড়িয়েছেন। ১৮ বছরের এই তারকা দেম্বেলের কাছে বর্ষসেরার আসরে পিছিয়ে থাকলেও তিনি হতাশ হননি। বরং, তিনি এই দায়িত্বশীল অনুষ্ঠানে ‘সেরা ফরোয়ার্ড’ পুরস্কার অর্জন করেন। এর পাশাপাশি, তিনি কিংবদন্তি ফুটবলারের স্মরণে প্রবর্তিত ‘ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা অ্যাওয়ার্ড’ও জিতেছেন। বল পায়ে তার অনন্য দক্ষতা ও প্রতিভার জন্য তাকে এই বিশেষ সম্মান দেওয়া হয়। ইয়ামালের এই সফলতা প্রমাণ করে যে, ভবিষ্যতের ফুটবলের দিকনির্দেশনায় তরুণ প্রতিভাদের অবদান অপরিসীম।
আলোচনায় এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার, যা জিতে আবারও শিরোনামে এসেছেন পর্তুগালের দর্শকপ্রিয় তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। আল নাসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে তিনি এই পুরস্কার লাভ করেন, যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন করিম বেনজেমা ও রিয়াদ মাহরেজ। পুরস্কার গ্রহণের পর, দুবাইয়ের মঞ্চ থেকে রোনালদো এক ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। ৩৯ বছর বয়সী এই ফুটবল জাদুকর জানান, বড় কোনো ইনজুরির না হলে তিনি নিশ্চিতভাবেই ক্যারিয়ারে এক হাজার গোলের মাইলফলক স্পর্শ করবেন। তাঁর অদম্য জেদ এবং সাফল্যের ক্ষুধা দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
এ ছাড়া, এই আসরে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। পিএসজিকে অসাধারণ সফলতার জন্য লুইস এনরিকে ‘সেরা কোচ’ এবং পিএসজির পুরো দলকেই ‘সেরা ক্লাব’ হিসেবে মান্যতা দেওয়া হয়। এছাড়াও, পিএসজির ডেজিরে দুইয়ে ‘সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়’ পুরস্কার পান। এভাবেই, দুবাইয়ের এই রাতটি ফুটবলের বিশ্বমানের বড় উৎসবে পরিণত হয়, যেখানে দেম্বেলের রাজত্ব আর রোনালদোর ১০০০ গোলের স্বপ্ন ছিল বড় আলোচনার বিষয়। এই সব পুরস্কার ও স্বীকৃতি মূলত কারিগরি দক্ষতা, ধারাবাহিক পারফরম্যান্স এবং খেলোয়াড়ের প্রতিভার ভিত্তিতে দেওয়া হয়, যা ফুটবলপ্রেমীদের জন্য সবার জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।





