শুক্রবার, ২২শে আগস্ট, ২০২৫, ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৯৩৭ কোটি টাকা লাভ

বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের অনিরীক্ষিত হিসাববিশ্লেষণে জানা গেছে, তারা ৯৩৭ কোটি টাকা শেয়ারহোল্ডারের জন্য লাভ করেছে। এটি তাদের ৫৫ বছরের প্রতিষ্ঠা জীবনে এক বিশাল ইতিহাস গড়েছে। এর আগের সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জিত হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে, যেখানে লাভ ছিল ৪৪০ কোটি টাকা।

বিমান বাংলাদেশের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ. বি. এম. রওশন কবীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। তিনি বলেছেন, এই সফলতার পেছনে রয়েছে যাত্রী ও গ্রাহকদের অটুট আস্থা ও সমর্থন, যা তাদের এই বিশাল মুনাফা অর্জনে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এই সাফল্য এসেছে দক্ষ সম্পদ ব্যবস্থাপনা, কার্যকর কৌশল গ্রহণ এবং উন্নত মানের যাত্রীসেবার ধারাবাহিক উন্নয়নের ফল হিসেবে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে, বিমানের দীর্ঘ ৫৫ বছরের যাত্রায়, তারা সব মিলিয়ে ২৬ বছর লাভের মুখ দেখেছে। বিশেষ করে ২০০৭ সালে করপোরেশন থেকে পব্লিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত হওয়ার পর গত ১৮ বছরে তাদের মোট পুঁজি আরও শক্তিশালী হয়েছে, যেখানে মোট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৫৮৯ কোটি টাকারও বেশি।

অর্থনৈতিক দিক থেকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের মোট আয় হয়েছে ১১,৬৩১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। যে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মাঝেও এই অঙ্ক অনেকটাই উন্নতির পথে। এর আগে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করার রেকর্ড গড়েছিল তারা।

আরও উল্লেখযোগ্য হলো, এই বছর বিমানের বহরে ছিল মোট ২১টি উড়োজাহাজ। এর মধ্যে বর্তমানে ১৯টি নিজস্ব মালিকানাধীন, যার মধ্যে রয়েছে অত্যাধুনিক এবং জ্বালানি-সাশ্রয়ী চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮ এবং দুটি বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার।

বিমানের নিজস্ব বহর রক্ষণাবেক্ষণের সক্ষমতা তাদের জন্য এক বড় শক্তি। লাইন রক্ষণাবেক্ষণ থেকে বড় ধরনের পরীক্ষা (চেক) পর্যন্ত সবই দেশেই সম্পন্ন হয়, যার ফলে বিপুল ব্যয় সাশ্রয় হয়।

অর্থনৈতিক বিবরণে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তারা পরিবহন করেছে ৩৪ লাখ যাত্রী, যা আগের বছরের চেয়ে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি। পাশাপাশি, কার্গো পরিবহন হয়েছে ৪৩,৯১৮ টন, এবং কেবিন ফ্যাক্টর ৮২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এর পাশাপাশি, জানুয়ারিতে তারা ইতিহাস গড়েছে, যেখানে সর্বোচ্চ টিকেট বিক্রির নজির স্থাপন করে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, মহাব্যবস্থাপক এ. বি. এম রওশন কবীর, বিমানের লক্ষ্য হলো—জাতীয় গর্বের সাথে বিশ্বমানের সেবা, নির্ভরযোগ্যতা এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় এয়ারলাইন্স হওয়া।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় রয়েছে—নতুন গন্তব্যে রুট সম্প্রসারণ, ডিজিটাল রূপান্তর, উন্নত যাত্রীসেবা এবং কার্গো সেবাকে আরও শক্তিশালী করা। এসব উদ্যোগের মাধ্যমে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ধারা আরও সম্প্রসারিত হবে এবং তারা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শীর্ষ এয়ারলাইন্সে পরিণত হওয়ার প্রত্যাশা করছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন