শুক্রবার, ২২শে আগস্ট, ২০২৫, ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

সিইসির ঘোষণা: ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ.এম.এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে দেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন এই লক্ষ্যে কাজ দ্রুত চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার বিকেলে রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তরে প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি বলেন, ‘নির্বাচনের সুসংহত ও শান্তিপূর্ণ আয়োজনের জন্য বিভাগীয় প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মীদের সাথে নিয়মিত বৈঠক করা হচ্ছে। কোনো কেন্দ্রের মধ্যে যদি গণ্ডগোল দেখা দেয়, সে ক্ষেত্রে সেই কেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করা হবে। তাছাড়া, কোনও দুর্নীতি বা অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত নির্বাচনে যারা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে সমস্যা সৃষ্টি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সার্বক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থার উপর জনসাধারণের আস্থা কমে গেছে, যা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষকে নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের আরও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।’

নির্বাচনের তফসিল এখনও ঘোষণা না হলেও, কমিশন মনে করছে যে, নির্বাচন কার্যক্রম অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তফসিল ঘোষণার কমপক্ষে দুই মাস আগে নির্বাচনের তারিখ জানিয়ে দেয়া হবে।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় সিইসি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন, প্রিজাইডিং অফিসার এবং প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টা দ্বারা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব। এর মাধ্যমে আমরা মানুষের আস্থা ফিরে আনতে পারব। এই জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি বেশ ভালো হলেও, এটি আরও উন্নত করার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, সবাই স্বস্তির সাথে ভোট দিতে পারে। তবে দুঃখজনক এই যে, অনেক মানুষ ভোট কেন্দ্রে যেতে ভুলে গেছে। অনেকে মনে করে, এটার কোনো প্রয়োজন নেই কারণ, কেউ না কেউ তাদের জন্য ভোট দিয়ে দেবে। এই ধরনের মানসিকতা দূর করতে হবে। এজন্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে এবং সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাচ্ছি।’

নির্বাচন স্বচ্ছ ও সুন্দর করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এ জন্য তিনি বিশেষভাবে অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসব প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন থাকতে আহ্বান জানানো হয়। এ বিষয়েও তিনি বলেন, ‘আমরা সমস্যাকে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টতার সাথে মোকাবেলা করছি।’

এছাড়া তিনি বলেন, অতীতে নির্বাচনে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে জড়িত প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসনের সদস্যদের ভবিষ্যতে নির্বাচনে নিযুক্ত না করার চেষ্টা চলছে।

সিইসি নিশ্চিত করেন, নির্বাচন কমিশন কোনও পক্ষের পক্ষে কাজ করবে না; এর পরিবর্তে, ১৮ কোটি মানুষের জন্য নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনই আমাদের মূল লক্ষ্য। তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অজুহাত ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে, যা আমাদের নজরে আছে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

অবশেষে, তিনি বলেন, ভোট প্রদান করা দায়িত্বের পাশাপাশি একান্তই ঈমানী দায়িত্বও। সবাই মিলে এই দায়িত্বটি পালন করাই আমাদের লক্ষ্য।

পোস্টটি শেয়ার করুন