বৃহস্পতিবার, ২১শে আগস্ট, ২০২৫, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মাছ রপ্তানি ৬ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা

বাংলাদেশে ২০২৪-’২৫ অর্থবছরে প্রায় ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার সমমূল্যের ৯১ হাজার মেট্রিক টন মাছ বা মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং দেশের মৎস্য খাতের বিকাশের প্রমান।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রদান করা হয়, যেখানে ‘মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন এবং সর্বোত্তম ব্যবহারের’ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি বসে খুলনায় বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সম্মেলনকক্ষে।

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তথ্য বলছে, দেশে মোট মাছের উৎপাদন হয়েছে ৫০ দশমিক ১৮ লাখ মেট্রিক টন। দেশের ১৪ লাখ নারীসহ দুই কোটির বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই খাতে জড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর জীবিকা মূলত মাছ চাষ, আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে। দেশের মোট জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান প্রায় ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ, এবং কৃষির জিডিপিতে এর অবদান প্রায় ২২ দশমিক ২৬ শতাংশ।

বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের ইলিশ মাছের উৎপাদন শীর্ষে রয়েছে, এরপর রয়েছে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছের আহরণ এবং তেলাপিয়া মাছের উৎপাদনে দেশ পঞ্চম অবস্থানে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক বিপুল কুমার বসাক। বক্তারা বলেছেন, মানসম্পন্ন মৎস্যপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন আরও বাড়ানো সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। মাছের পোনা সংগ্রহ, চাষ, আহরণ ও বাজারজাতকরণ থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ—সব পর্যায়ে মানের পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত রাখতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, আগে মৎস্যখাত দেশের রপ্তানি আয়তে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও বর্তমানে সেটা সপ্তম অবস্থানে নেমে এসেছে। এজন্য মানসম্মত পোনা সরবরাহ ও গুণগত মানের উন্নতির জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। এর পাশাপাশি, দেশীয় প্রজাতির মাছের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া চালু রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়।

খুলনা বিএফএফইএএর সাবেক সহ-সভাপতি এস হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান, মৎস্য অধিদপ্তরের কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল হাসান এবং সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আবুল হাসান।

সভায় মৎস্য খাতে খুলনা অঞ্চলের অবদান, লাভজনক মাছচাষ ও মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদনের আধিকারিক বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন-২০২০ সম্পর্কিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লিপ্টন সরদার, মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা।

এ অনুষ্ঠানে মাছচাষি, মাছ ব্যবসায়ী এবং রপ্তানি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষ অংশগ্রহণ করেন, যারা ভবিষ্যতে এই খাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা করেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন