বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, গ্যাসের সরবরাহের অভাবের কারণে শিল্পে উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বর্তমানে পর্যাপ্ত গ্যাসের চাপ না থাকায় অনেক কারখানা তাদের পূর্ণ উৎপাদন সক্ষমতা ব্যবহারে অক্ষম হয়ে পড়েছে। এই সংকটের ফলে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান গত বুধবার জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সঙ্গে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব কথা বলেন। তিনি পোশাক শিল্পের চলমান সংকট মোকাবিলার জন্য পাঁচটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাবও দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম ও এ বি এম সামছুদ্দিন।
তিনি আরো বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আন্তর্জাতিক বাজারে আমাদের প্রতিযোগীতা ধরে রাখতে হলে গ্যাসের ঠিক timely সরবরাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান গ্যাস সংকটের কারণে শিল্পে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের অর্থনীতি আর কর্মসংস্থানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রস্তাবित পদক্ষেপগুলো হল: দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বজায় রাখতে শ্রমঘন পোশাক ও বস্ত্র শিল্পের জন্য গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া হয়, তিতাস গ্যাসের নতুন সংযোগ অনুমোদনের ক্ষেত্রে দ্রুত যাচাই-বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করা, যাতে কারখানাগুলো সময়মতো উৎপাদন শুরু করতে পারে।
অতিরিক্ত লোডের প্রয়োজন নেই—শুধু সরঞ্জাম পরিবর্তন বা স্থানান্তরের জন্য আবেদনের তালিকা তৈরি করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া, ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা তাদের দ্রুত উৎপাদনে যেতে সহায়তা করবে।
এছাড়াও, যেসব কারখানা ধামরাই ও মানিকগঞ্জের মতো এলাকা যেখানে গ্যাস পাইপলাইনের শেষ প্রান্তে অবস্থিত, সেখানে গ্যাসের চাপ কমে যায়, সেক্ষেত্রে অন্তত ৩-৪ পিএসআই চাপ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিজিএমইএ সভাপতির বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং বলেন, দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাণবন্ত শিল্প এই পোশাক শিল্পকে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। শিল্পের এই সংকটের সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে এবং আমরা আন্তরিকভাবে এর সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি।