বৃহস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট, ২০২৫, ১৩ই ভাদ্র, ১৪৩২

ভারতে সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা

ভারতে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে ব্যাপক রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করতে সংবিধানকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিরোধী দলগুলোর দাবি। এই বিতর্কের মাঝে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সংসদে এক আলোচনায় তিনি বলেছেন, “আইনের শাসন সবার উপরে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হতে পারে, এমনকি পদত্যাগ করতে পারেন।” তাঁকে এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিরোধীরা বলছেন, সরকার সংবিধানের মূল কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মন্তব্য করেছেন, “এটি সংবিধান আক্রমণের মতো। আমরা সারাদেশে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলব।” অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এই বিল জনগণের কণ্ঠরোধের চক্রান্ত। সরকারজনসমর্থন হারিয়ে ভয় দেখানোর রাজনীতি শুরু করেছে।” এই পরিস্থিতিতে বিজেপির পক্ষ থেকে অমিত শাহ বলেন, “বিরোধীদের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। সংবিধান অক্ষুণ্ণ রয়েছে। আইন লঙ্ঘন করলে বা সংবিধান ভাঙলে কেউ রেহাই পাবেন না। আমাদের গণতন্ত্রের শক্তিই এটাই।” তাঁর এই মন্তব্য বিরোধীদের জন্য রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেছেন, “অমিত শাহ নিজেই স্বীকার করেছেন, এই বিলের পর পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অনিবার্য হয়ে দাঁড়াবে।” টাইমস অব ইন্ডিয়া বিশ্লেষণে উল্লেখ করেছে, “প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ বিরোধীদের হাতে শক্তি তুলে দিয়েছেন।” আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, “এই বিতর্ক থেকে স্পষ্ট, বিজেপি এখন ভেতরে চাপ অনুভব করছে, যা বিরোধীরা অপব্যবহার করতে পারে।” পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে—মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই—বিক্ষোভ মিছিলের ছবি দেখা গেছে। ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন ও নাগরিক মঞ্চগুলো রাস্তায় নেমে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে বলেছে, “সংবিধান রক্ষা করতে না পারলে কোনও সরকার বৈধ নয়।” অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতি ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন