সোমবার, ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র, ১৪৩২

নওগাঁর মোমনিপুর হাঁটে প্রতি মাসে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ ব্যবসা

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমিনপুর বাজারে দেশের অন্যতম বড় পাইকারি কাঁচা মরিচের হাট বসে। এই হাটে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা দুই দিন আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায়। হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কৃষকরা বলছেন, এ রকম দাম থাকলে তাদের প্রকৃত লোকসান হতে পারে, কারণ তারাও উৎপাদন খরচের পরিমাণ দিয়ে তেমন লাভ করতে পারছেন না। অন্যদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার মহাদেবপুরের মোমিনপুর কাঁচা মরিচের হাটের দৃশ্য ধরা হয়েছে। সপ্তাহের প্রতিদিনই এখানে হাট বসে, তবে এ হাট প্রতিবছর মূলত ৬ থেকে ৭ মাস জুড়ে চলে। এই বাজারে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ কেনাবেচা হয়। এখানকার মরিচ বিভিন্ন শহর ও এলাকাসহ দেশের অন্যান্য শহর যেমন ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্রগ্রাম, দিনাজপুরে সরবরাহ করা হয়।

মোমিনপুরের কুঞ্জবন এলাকা থেকে আসা কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, এ বছর আবহাওয়া अनুকূলে থাকায় কাঁচা মরিচের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় তাদের জন্য লোকসান হবে। ক্রয়মূল্য ছিল কেজিতে ১৩০-১৫০ টাকা, এখন তা পড়ে গেছে ৬০-৭০ টাকায়। এতে কৃষকদের উৎপাদন খরচও পুরোপুরি উঠবে না বলে তারা চিন্তিত। এই বছর মরিচের চাষে অনেক খরচ হয়েছে, শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক খরচ সহ যা দিয়ে তাদের কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।

বগুড়া থেকে আসা কাঁচা মরিচের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই হাটের মরিচ দেশের বিভিন্ন শহরে যাচ্ছে। তবে ভারত থেকে মরিচের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় বাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে।

মোমিনপুর হাটের কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ বললেন, এটি জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা মরিচের হাট, যেখানে বছরে ৬ থেকে ৭ মাস হাট বসে। প্রতি মাসে এই বাজারে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মরিচ বিক্রি হয়। কিন্তু বর্তমানে দাম যে কতো দ্রুত কমে যাচ্ছে, তা দেখে কৃষকরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় কাঁচা মরিচের ফলন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। শুরুতে বাজারে দাম সবসময়ই ভালো ছিল, তবে এখন একটু মজুদ কম হওয়ায় দাম কিছুটা কমে গেছে। কৃষকদের লাভের আশায় আমরা তাদের নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। চলতি বছর নওগাঁ জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন