মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১লা আশ্বিন, ১৪৩২

ইসরায়েলের হামলা থেকে গাজা ছেড়ে গেছে প্রায় ৩ লাখ মানুষ

ইসরায়েলের চলমান মারাত্মক হামলার কারণে জোটের চাপে গাজা থেকে ব্যাপক সংখ্যক মানুষের পালানো শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি আর্মি রেডিও জানিয়েছে, গত রোববারের মধ্যে গাজার মোটামুটি ৩ লাখ মানুষ তাদের বাসস্থান ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্রয় নিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলার ফলে কমপক্ষে ৬৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩৪৬ জন আহত হয়েছেন। এই ভয়ংকর পরিস্থিতি পরিস্থিতির কারণে গাজা শহর বড় ধরনের সঙ্কটে পড়েছে।

বিশেষ করে, গাজার বিভিন্ন বহুতল ভবন ধ্বংসের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে দু’টি ভবন, যার একটি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে বাস্তুচ্যুত মানুষরা আশ্রয় নিয়ে ছিল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও শেয়ার করেছে, যেখানে দেখা যায় ওই ভবনগুলো বোমা হামলার শিকার হয়ে ধসে পড়ছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা দুটি বহুতল ভবনে হামলা চালিয়েছে, যেখানে তারা বলছে, হামাস গোয়েন্দাদের জন্য ব্যবহৃত ছিল। তারা আরও জানায়, গাজা শহরটি দখল করার পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল, যেখানে হামাসকে ভেঙে ফেলার পাশাপাশি থাকা শত শত জিম্মি মুক্তি করার লক্ষ্য রয়েছে। আবাসিক এলাকায় যখন এই হামলা চালানো হয়, তখন অনেক বাসিন্দাই নিরাপদ স্থানে যাওয়ার সুযোগ পাননি, ফলে এক বড় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে, গাজায় মোবাইলে ও ভিডিও পোস্টে দেখা যাচ্ছে, ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারকর্মীরা লোকজনের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, একদিকে ধোঁয়ার ঘন কুণ্ডলী আকাশে উড়িয়ে চলছে।

আন্তর্জাতিকভাবে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ইসরায়েলির সঙ্গে যোগদানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্ক এফ. রুবিও বলেছেন, তারা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। রুবিও ইসরায়েল-পন্থি এই সফরকে প্রমাণ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে থাকছে তাদের অঙ্গীকারের সঙ্গে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই সফর দু’দেশের বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করবে।

তবে, জেরুজালেমে রুবিওর সফর ও রাজনৈতিক আলোচনা নিয়ে ফিলিস্তিনি নেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। তারা বলেছেন, যদি গাজায় বিমান হামলা চালানো হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে।

অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বহু রাষ্ট্র এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য দোহা ও অন্যান্য সভায় আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এই সংকট নিরসনে পশ্চিমাশ্রয়ী মধ্যস্থতা অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে, গাজা অভিমুখে মানবিক ত্রাণ পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

গাজায় হোচটের মধ্যে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা গ্রীক জাহাজ ‘অক্সিগোনো’ অথবা ‘অক্সিজেন’ রবিবার থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এই নৌযানটির উদ্দেশ্য হলো, নাগরিকদের এবং উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে সহায়তা করা। মানবিক সংকটের এই মুহূর্তে বিশ্ব সম্প্রদায় একযোগে কাজ করছে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য।

পোস্টটি শেয়ার করুন