বুধবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৫, ২৩শে আশ্বিন, ১৪৩২

ভোলায় ভেঙে গেছে ব্রিজ, চলাচলে ভোগান্তি লক্ষাধিক মানুষের

ভোলার লালমোহন উপজেলায় একটি প্রাচীন ব্রিজের ভাঙনের কারণে স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে নানা দপ্তরে জোর প্রচেষ্টা চালানো সত্ত্বেও এখনো কোনো সংস্কার বা নতুন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে কালমা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তরুল্লা সেন্টার ও বিশ্বাসের পাড়ার মধ্যবর্তী নাজিরপুর খালের উপর নির্মিত হয়েছে এই প্রাচীন আয়রন ব্রিজ। তবে এই ব্রিজটির সামনের অংশ প্রায় দেড় বছর আগে ভেঙে গেছে, অন্যদিকে মাঝের অংশও ক্ষতিগ্রস্ত। এর ফলে আজ প্রায় ১০ হাজার মানুষ, বিশেষ করে চর ছকিনা, তরুল্লা সেন্টার, বিশ্বাসের পাড় ও বদরপুর ইউনিয়নের চর টিটিয়া গ্রামের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

কালমা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শাহ আলম জানান, এই ব্রিজ দিয়েই ছোট যানবাহন চলাচল করতো। অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, টেম্পু ও নসিমন চলাচল করত। কিন্তু কয়েক বছর আগে ব্রিজের মাঝের দুটি অংশ ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়। পরে স্থানীয়রা কাঠ দিয়ে গর্তের উপরের অংশ আটকিয়ে দেয়। এখন ব্রিজের রেলিং ভেঙে গেছে এবং সামনের অংশ ভাঙার পর থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

তারা আরো বলেন, ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় মানুষ পায়েঁ হাঁটে ও ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। অনেকের পদপিষ্ট হয়েও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বাসের পাড় গ্রামের মো. ইসমাইল বিশ্বাস বলেন, লালমোহন থেকে তাঁদের এলাকার জন্য এই ব্রিজই ছিল প্রধান একমাত্র পথ। ব্রিজ পার হয়ে তাদের যাতায়াত করতে হয়েছে। এখন ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় তারা পায়ে হাঁটে বা ব্রিজের কাছাকাছি এসে হাঁটতে বাধ্য হন। বাড়ি যাওয়ার পথে বাজার বা চাউলের বস্তা বহনেও খুব কষ্ট হয়।

অন্যদিকে, মো. আব্দুল হক জানান, ব্রিজ ভেঙে যাওয়ায় তাঁদের গ্রামের রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া খুব কষ্টের ব্যাপার। দৈনন্দিন জীবনে অ্যাম্বুলেন্স বা অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে না পারায় ভোগান্তি বাড়ছে। অনেক সময় পায়ে হাঁটে এক কিলোমিটার পথ পার করে হাসপাতালে যেতে হয়।

স্কুলছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, প্রতিদিন ভাঙা ব্রিজ পার হতেই হয় স্কুলে যাওয়ার জন্য। ভয় লাগলেও বিপদের কথা ভাবিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়।

স্থানীয় মো. মানিক হাওলাদার জানান, অনেক দিনের দাবি করে আসছিলেন তারা, কিন্তু প্রথম থেকেই কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে এই ভাঙা ব্রিজটি মোক্ষম এক চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দ্রুত একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য তারা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

এ বিষয়টি নিয়ে লালমোহন উপজেলার এলজিইডির প্রকৌশলী রাজীব সাহা জানান, এই ব্রিজসহ আরও কিছু ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে নতুন করে ব্রিজ নির্মাণ করে জনসাধারণের দুর্ভোগের অবসান ঘটানো সম্ভব হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন