বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূজা হলো লক্ষ্মীপূজা, যা আজ পালিত হচ্ছে। এই পূজায় মানুষের মনো BB টনা থাকে ধনসম্পদ, সৌভাগ্য এবং সৌন্দর্য নিয়ে। শাস্ত্রমতে, লক্ষ্মী হলেন ধন-সম্পদ, সৌভাগ্য এবং সৌন্দর্যের দেবী। তিনি বিষ্ণুর পত্নী হিসেবে প্রসিদ্ধ, পাশাপাশি বিষ্ণুর শক্তিরও উৎস।
লক্ষ্মীর বাহন হলো প্যাঁচা। শাস্ত্রমতে, যখন বিষ্ণু রাম ও কৃষ্ণ রূপে অবতার গ্রহণ করেন, তখন লক্ষ্মী হন সীতা ও রাধার রূপে তাঁদের সঙ্গিনী। কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে দেবী লক্ষ্মী তার স্বনির্ভর গৃহে ধন-धान্যে ভরিয়ে দিতে আগমন করেন। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-মহারাজা, ব্যবসায়ীরা এবং সাধারণ গৃহস্থরা এই পূজার মাধ্যমে দেবীর কাছে নিজেদের ভাগ্য ও সমৃদ্ধির প্রার্থনা করেন। শারদীয় দুর্গোৎসবের পর প্রথম পূর্ণিমা তিথিতে এই লক্ষ্মীপূজা পালন হয় বলে মনে করা হয়।
পঞ্জিকা অনুসারে, আজ বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে পূর্ণিমা তিথির সূচনা হবে এবং কাল সকাল ১০টা ১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডে এই তিথি শেষ হবে।
বাংলার সমাজে লক্ষ্মী সম্পর্কিত নানা গল্প প্রচলিত রয়েছে, যা লক্ষ্মীপূজার দিন পড়া হয় পাঁচালি আকারে। এই বেশ কয়েকটি পাণ্ডুলিপির মধ্যে অন্যতম হলো লক্ষ্মীর পাঁচালি।
লক্ষ্মীপূজার গুরুত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে এর অনুষঙ্গসমূহ। সেগুলির মধ্যে রয়েছে সিঁদুর, ঘট, ধান, মাটি, আম্রপল্লব, ফুল, দূর্বা, তুলসীপাতা, হরীতকী, চন্দন, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, আতপ চাল ও জল। এই পূজায় ব্যবহৃত হয় মঙ্গলঘট, ধানের ছড়া, এবং গৃহের আঙিনায় চালের গুঁড়োর আলপনা, যেখানে লক্ষ্মীর চোখের ছাপ আঁকা হয়। এই দিন বিশেষ করে রমণীরা উপবাস ও ব্রত পালন করেন।
লক্ষ্মীপূজার রাত্রি জাগরণ একটি বিশেষ প্রথা। এটি কোজাগরী বলে পরিচিত, যার অর্থ ‘কে জাগরী বা কে জেগে আছো’। শাস্ত্র মতে, এই রাতে লক্ষ্মী দেবী সব গৃহে যান। তবে, যারা গৃহের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে থাকেন, তাদের ঘরে পৌঁছেন না তিনি। এ কারণেই এই পূজাকে কোজাগরী বলা হয় এবং রাত্রি জাগরণের রীতি রয়েছে।
বাঙালি হিন্দুরা প্রতি বৃহস্পতিবারও লক্ষ্মীর পূজা করে থাকেন, যা তাদের বিশ্বাস ও আচার-অনুষ্ঠানের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই দিনগুলোতে দেবী লক্ষ্মীর প্রতি বিশেষ ভক্তি ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করা হয়।