সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং সরাসরি বিনিয়োগের সম্ভাবনা জোরদার করতে আজ (সোমবার) রাজধানী ঢাকায় শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ‘সৌদি আরব-বাংলাদেশ বিজনেস সামিট’। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি সৌদি আরব-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসএবিসিসিআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়েছে, যার মূল লক্ষ্য হলো বাংলাদেশি পণ্যের সৌদি বাজারে উপস্থিতি বৃদ্ধি করা এবং একদিকে প্রভাবশালী ক্রেতাদের ওপর নির্ভরতা কমানো, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করা।
সংবাদ সম্মেলনে এসএবিসিসিআইর সভাপতি আশরাফুল হক চৌধুরী উল্লেখ করেন, ‘এই উদ্যোগটি খুব সময়োপযোগী এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও বিনিয়োগ অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সহায়ক হবে। সামিটের মূল উদ্দেশ্য হলো— সৌদি বাজারে বাংলাদেশের পণ্য ও সেবা পরিচিতি বাড়ানো, যাতে একচেটিয়া নির্ভরতা কমে গিয়ে বহুমুখী বাণিজ্য প্রসারিত হয়।’
উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে দুদেশের ব্যবসায়ী নেতা, অর্থনীতিবিদ, নীতি নির্ধারক ও খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন। এর পাশাপাশি, ২০ সদস্যের একটি সৌদি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের অংশগ্রহণে বিভিন্ন খাতে বৃহৎ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্ভাবনা উন্মোচনের পরিকল্পনা রয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবেন মাজদ আল উমরান গ্রুপের মালিক শেখ ওমর আবদুল হাফিজ আমির বখশ।
আগামীকাল ৭ অক্টোবর রাজধানীর একটি হোটেলে এই সামিটের মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। সমাবেশের সূচী অনুযায়ী, প্রথম দিন সৌদি প্রতিনিধিদল ঢাকা পৌঁছানোর পর তাদের সম্মানে একটি নৈশভোজের আয়োজন করা হবে। এর শেষ দিন, অর্থাৎ ৮ অক্টোবর, বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থা ও সরকারের প্রতিনিধি সম্মেলনের বৈঠকগুলো সম্পন্ন করে সৌদি প্রতিনিধি দলের চূড়ান্ত সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সৌদি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক, কৃষিপণ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, ডিজিটাল ফিন্যান্স, পাটজাত পণ্য ইত্যাদির বিশাল রপ্তানি সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন বিভিন্ন খাতে যৌথ বিনিয়োগের পরিকল্পনাও করছে, যা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আশরাফুল হক চৌধুরী আরও বলেছেন, পেট্রোকেমিক্যাল, স্টিল, কৃষিশিল্প, সবুজ প্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা এবং সেমিকন্ডাক্টরসহ বিভিন্ন শিল্প খাতে দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা বিদ্যমান। এই উদ্যোগের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।