ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বন্দি থাকা জীবিত ১৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কমিটির কাছে হস্তান্তর করেছে হামাস, যা ছিল বড় একটি মানবিক পদক্ষেপ। সোমবার সকালে এই বন্দি মুক্তি প্রক্রিয়াকে শুরু করা হয়। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস এলাকায় এই মুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়। সেখান থেকে রেডক্রসের গাড়িগুলো বন্দিদের সংগ্রহ করে গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এটি ছিল দ্বিতীয় দফার মুক্তিপ্রক্রিয়া, যেখানে প্রথমে ৭ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেয় হামাস। মুক্তিপ্রাপ্ত ওই ইসরায়েলি ব্যক্তিরা গাজা পার করে নিজ দেশে ফিরে যান, যেখানে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা দেওয়া হয়। এরপর তারা তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হন। নতুন করে মুক্তি পাওয়া ১৩ জনের মধ্যে অন্যরা একই প্রক্রিয়ায় ইসরায়েলে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, হামাসের কাছে এখনো অবশিষ্ট রয়েছে ৪৮ জন নিহত বা জিম্মির দেহ, যেগুলোও এদিনের মধ্যে রেডক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
জিম্মি মুক্তির খবর ছড়িয়ে পড়তেই তেলআবিবে উচ্ছ্বাসের মাঝে ধুকছে মানুষের মন। যেখানে অশ্রুসজল চোখে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আনন্দে মেতে উঠেছেন বেশ কয়েকজন, সেখানে অনেকেই কেঁদে ফেলেছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের মুক্তিপ্রাপ্ত সাত জিম্মি কিছুক্ষণ আগে সীমান্ত অতিক্রম করে ইসরায়েলে প্রবেশ করেছেন এবং এখন প্রাথমিক অভ্যর্থনা কেন্দ্রে যাচ্ছেন। তারা পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘দ্য হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ ‘ওয়েলকাম হোম’ শিরোনামে পোস্ট করে তাদের স্বাগত জানিয়েছে, এই সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি মুক্তির দাবিতে কাজ করে আসছে। সংগঠনের ভাষ্যমতে, ‘আমাদের সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। শেষ জিম্মির অবস্থান শনাক্ত ও যথাযথ দাফন না করার পর্যন্ত এই সংগ্রাম চলবে। এটি আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।’ এই ঘটনায় পুরো দেশ ও পরিবারগুলোতে উৎফুল্লতা ও আশা জেগেছে, তবে অপেক্ষা আরও অনেকটাই রয়ে গেছে।