গত বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরের রূপনগরে একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে, যা দ্রুত বিস্ফোরণে পাশের চারতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের এই ঘটনায় পরে দপ্তরে রয়েছে ১৬টি লাশ, এর মধ্যে ১০ জনের পরিচয় স্বজনদের মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। অগ্নিনির্বাপক দলের দ্রুত উপস্থিতির কারণে প্রায় ২৬ ঘণ্টা চলা এই পরিস্থিতি প্রায় ২ ঘণ্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ফায়ার সার্ভিসের প্রবীণ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানান, আগুনের কারণ ও প্রকৃতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এটি মূলত রাসায়নিক গুদামে অপ্রফেশনাল ও অবৈধ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ফলাফল। ঐ গুদামটি অগ্নিনির্বাপকদের তালিকায় ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি, সেই সঙ্গে অতিরিক্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অগ্নিকাণ্ডের সময় গুদামের ভেতরে অনেক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয়, যা নিঃশ্বাসে প্রবেশ করলে ফুসফুস, ত্বক ও হার্টের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, গুদামটিতে মহাবিপদজনক কেমিকেল থাকায় দ্রুত কাজ চালানো সম্ভব হয়নি। এ কারনে অভিযানে দীর্ঘ সময় লেগে যায়।
উল্লেখ্য, গুদামটি সরকারি নিষেধাজ্ঞা ও নীতিমালা ভঙ্গ করে পরিচালিত হচ্ছিল, যেহেতু এর লাইসেন্স ছিল না। একই সময় পাশের পোশাক কারখানা ‘আনোয়ার ফ্যাশন’ ও আলম ট্রেডার্স নামের রাসায়নিক গুদামের মালিকের খোঁজ নেই। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট বিভাগ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
অগ্নিকাণ্ডের পর দ্রুত পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবারের জন্য ঘোষণা করা হয়, প্রত্যেককে ২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত আহত শ্রমিকদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে, যারা আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন। কমিটির সদস্যরা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত, ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন ও ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে সুপারিশ করবে।