রবিবার, ১৯শে অক্টোবর, ২০২৫, ৩রা কার্তিক, ১৪৩২

পর্তুগালে নিকাব পরlicationে বাধা, জরিমানা ও কারাদণ্ডের প্রস্তাব পাস

পর্তুগালের পার্লামেন্টে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হয়েছে, যা জনসমক্ষে মুখ ঢাকা পোশাক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্দেশ্যে নির্দেশ করে। এই বিলটির আওতায় কট্টর ডানপন্থি দলের প্রস্তাবনায় মুসলিম নারীদের বোরকা ও নিকাব পরাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বিল অনুযায়ী, যেখানে মুখ ঢাকা পোশাক পরতে বাধ্য করলে জনসাধারণের মধ্যে ২০০ থেকে ৪০০০ ইউরো জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। যদি কেউ অধিকার চায় বা বাধ্য হয় মুখ ঢাকা পোশাক পরতে, তাহলে সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। তবে বিমান ভ্রমণ, কূটনৈতিক কাজে বা ধর্মীয় উপাসনালয়ে মুখ ঢাকা পরার অনুমতি রয়েছে। খবর আল জাজিরার।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই বিল এখন সাংবিধানিক বিষয়, মানবাধিকার ও স্বাধীনতা সম্পর্কিত আইন পর্যালোচনা কমিটিতে আলোচনার জন্য অপেক্ষা করছে।

একের আগে ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের মতো ইউরোপের বেশ কিছু দেশ এই ধরনের পোশাকের ওপর আংশিক বা পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই বিল আইনে রূপান্তরিত হলে, পর্তুগালও সেই তালিকায় নাম লেখাবে।

একদিকে, প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো ডি সুজা এই বিধানকে ভেটো দিতে পারেন বা সাংবিধানিক আদালতের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করতে পাঠাতে পারেন।

শুক্রবারের পার্লামেন্ট অধিবেশনের সময়, বামপন্থী বেশ কিছু নারী আইনপ্রণেতা এই বিলের বিরুদ্ধে সরব হন। তবে, মধ্য-ডানপন্থি জোটের সমর্থনে এই প্রস্তাব পাস হয়। প্রতিপক্ষরা বলছেন, এই আইন নারীদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করছে।

কঠোর ডানপন্থি দলের নেতা আন্দ্রে ভেনচুরা মন্তব্য করেন, ‘আজ আমরা সেই নারীদের রক্ষা করছি, যারা বোরকা পরার মাধ্যমে নিজেদের স্বাধীকারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি গণতন্ত্র ও আমাদের মূল্যবোধকে রক্ষা করার জন্য এক ঐতিহাসিক দিন।’

অন্যদিকে, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা আন্দ্রেয়া নেতো তার ভোটের আগে বলেছিলেন, ‘এটি নারীর সমতা ও স্বাধীনতার বিষয়। কারো মুখ ঢাকা উচিত নয়।’

সেখানে ১০টি পার্টির মধ্যে দু’টি দল এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। পিপল-অ্যনিমেলস-নেচার পার্টি এবং টুগেদার ফর দ্য পিপল পার্টি এই বিলের বিরোধিতা জানিয়েছে, তাদের মতে, এটি বৈষম্য সৃষ্টি করছে।

ইউরোপে তেমন বেশীরভাগ মুসলিম নারী মুখ ঢাকা পরেন না, তবে নিকাব ও বোরকা নিয়ে এখন অনেক দেশেই বিতর্ক চলছে। কিছু মতবাদ বলছে, এ ধরনের পোশাক লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতীক ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। ফলে, অনেকে মনে করেন, এই পোশাক নিষিদ্ধ হওয়া উচিত।

পোস্টটি শেয়ার করুন