অফসঙ্গত, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশের স্পিন বোলদাক শহরে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী আবারও হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত לפחות ৪০ জন নিহত এবং আরও ১৭৯ জন আহত হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। স্পিন বোলদাক শহরটি আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করে। আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজের খবরে জানানো হয়, নিহত ও আহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই সিভিলিয়ান, যার মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।
গত ১১ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী সীমান্তে সংঘর্ষ, হামলা-পাল্টা হামলা চলাকালে, ১৫ অক্টোবর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতে যান দুই দেশ। তবে এই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ গতকাল ১৭ অক্টোবর শুক্রবার শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবারও হামলা চালানো হয়। পাশাপাশি, শহরটির নিকটবর্তী এলাকাগুলোতেও পাকিস্তানি সেনারা আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করে। এই হামলার কারণে বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে, যার ফলে আরও হতাহত হয়েছে।
এদিকে, হামলায় আক্রান্ত ও আহতদের একজন হাজি বাহরাম বলেন, “আমি ইতিহাসে এত বড় অন্ধকার দেখিনি। একটি দেশ, যেটা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে— তারা এখানে নারীরা, শিশুপালক ও সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।”
এই হামলার পাশাপাশি, পাকিস্তানি স্থলবাহিনী স্পিন বোলদাক শহরের বিভিন্ন এলাকায়, যেমন– নোকলি, হাজি হাসান কেলাই, ওয়ার্দাক, কুচিয়ান, শহীদ ও শোরবা—অস্থায়ী হামলা চালিয়ে আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করেছে। এই হামলায় বেশ কিছু বাড়িঘর ও দোকান ধ্বংস হয়ে গেছে। সংঘর্ষের ফলে হতাহত বেশ ক’জন।
প্রসঙ্গত, আফগানিস্তান- পাকিস্তান সম্পর্কের কঠিন পরিস্থিতির মূল কারণ হিসেবে দেখা হয় পাকিস্তানের তালেবানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান (টিটিপি)-এর উত্থান ও কর্মকাণ্ডকে। কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের সরকার এই গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করলেও, এখনও এই সংগঠনটি পাকিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্তবর্তী প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া টিটিপির মূল ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বিতর্কিত পরিস্থিতিতে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে, যা অস্বীকার করে যাচ্ছে কাবুল।
সাম্প্রতিক সময়ে, ৯ অক্টোবর কাবুলে একটি হামলা চালিয়ে তালেবানের শীর্ষ নেতা নূর ওয়ালি মেহসুদকে হত্যা করে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী। এই ঘটনার দু’দিন পর, ১১ অক্টোবর, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সেনাবাহিনী মধ্যে তীব্র সংঘাত শুরু হয়। চার দিন ধরে চলা এই সংঘর্ষের পর ১৫ অক্টোবর আবারও ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি সম্মতিপ্রাপ্ত হয়। এরপর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে। শনিবার, দুপুর ১ টার দিকে মির আলী সেনা ক্যাম্পেও হামলা চালানো হয়। এর ফলে পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।
সূত্র: তোলো নিউজ