বুধবার, ২৯শে অক্টোবর, ২০২৫, ১৩ই কার্তিক, ১৪৩২

গাজায় ত্রাণ প্রবেশে বাধা, অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরাইল

ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের মধ্যে অন্যতম হলো গাজায় অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) প্রায় এক বছর আগে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, যেখানে উল্লেখ ছিল যে ইসরাইল অনাহারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে শিশুসহ সাধারণ মানুষের জীবন বিপন্ন করছে।

সম্প্রতি, যুদ্ধবিরতি চুক্তির কার্যকারিতা সত্ত্বেও, ইসরাইল সরকার গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার ইসরাইলি সরকার গাজায় ত্রাণ ও সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়। তাদের পরোক্ষ কারণ হিসেবে দাবি করা হয় যে, জিম্মিদের লাশ হস্তান্তর সংক্রান্ত হামাসের চাপে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আল জাজিরার সাংবাদিক আলি হার্ব সতর্ক করে বলেছেন, এই সাহায্য বন্ধ করা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের অমান্য, যা সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা কঠোরভাবে বিপন্ন করে তুলেছে। যেনতেনপ্রকারে তারা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে সাধারণ নাগরিকদের বঞ্চিত করছে। আইসিসির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধের সময় নাগরিকদের অনাহার বা খাদ্য ও জিনিসপত্রের অভাবে হত্যা বা অবরুদ্ধ করার মতো কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জেনেভা কনভেনশনেরও অধীনে, ত্রাণ সরবরাহে ইচ্ছাকৃত বাধা দেওয়াও গৌণ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।

জাতিসংঘের তদন্তকারী সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল গাজায় ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। তারা বলেন, ইসরাইলের অবরোধের কারণে, গাজা উপত্যকায় শিশু ও সাধারণ মানুষের ওপর এর ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়েছে। অপুষ্টি, তীব্র অনাহার, ডায়রিয়া ও কলেরা রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে মৃত্যুর হারও বেড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, যুদ্ধবিরতির পরেও ইসরাইল গাজায় সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে, এবং একইসঙ্গে হামাস ও জাতিসংঘসহ অন্যান্য পক্ষকে দায়ী করে মানবিক সংকটের জন্য। এই পরিস্থিতি বিশ্ববাসীর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কারণ সাধারণ মানুষ এই অমানবিক পরিস্থিতিতে পড়ে জীবন বাঁচানোর জন্য ছটফট করছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন