ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় মো. আমির হামজা ওরফে হানজালাকে হত্যা মামলার মূল রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত আরেক মাদরাসা ছাত্রকে (১৬) গ্রেপ্তার করেছে, যার ধরনায় কাঁথার সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে মূলত ধারে নেওয়া ৫০ টাকা নিয়ে ব্যাপার ছিল। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. আজম খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্র振 সংবাদে জানা যায়, নিহত হামজা আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের শুকুরহাটা গ্রামের সায়েমউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে। সে গোপালপুরের চান্দড়া নূরানী তালিমুল কুরআন মাদরাসা ও এতিমখানার দ্বিতীয় জামাতের ছাত্র ছিল। গ্রেপ্তারকৃত কিশোরও একই মাদরাসার ছাত্র।
সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজম খান বলেন, ওই কিশোর প্রায়ই হামজার কাছ থেকে টাকা ধার নিত। সর্বশেষ ৫০ টাকা ধার নিয়ে অনেক দিন প্রায়ই তা ফেরত দিচ্ছিল না। হামজা ধার চাওয়ায় কিশোরের বিরক্তি বাড়ে। এ নিয়ে রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে হামজাকে বলে, সে বাড়ি থেকে টাকা আনতে দেবে। এরপর একটি সাইকেলে করে হামজাকে নিয়ে যায়।
ঘটনার স্থান nearby একটি বাগানে তখন দুই কিশোরের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে যায়, তখন ওই কিশোর হামজার গলা টিপে ধরে, যার ফলে হামজার শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।
ঘটনার পর কিশোর মরদেহটি বাগানে ফেলে দিয়ে মাদরাসায় ফিরে আসে। এক ঘণ্টা পর আবার বাগানে গিয়ে মরদেহের পাশে থাকা কাঁথা নিয়ে যায়। পরে বাড়ি থেকে একটি প্লাস্টিকের বস্তা এনে হামজার মরদেহ বস্তায় ঢুকিয়ে তা পানিতে ডুবিয়ে দেয়— যাতে সেটি ভাসতে না পারে।
গত মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পুকুরে মরদেহ ভেসে উঠলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এটি ছিল একটি ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড। তদন্তে পুরোদমে কাজ শুরু হয় এবং চারটি আলাদা টিম গঠন করা হয়। প্রাথমিক আবিষ্কারে, হত্যাকাণ্ডের মূল কারিগর হিসেবে সন্দেহভাজন কিশোরের সঙ্গে বেশ কিছু আলামত মিলেছে, যার মধ্যে উদ্ধার হওয়া কাঁথা ও মরদেহের ঘ্রাণ বিষয়টি নিশ্চিত করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই কিশোর স্বীকার করেছে, সে হত্যার সঙ্গে জড়িত। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আলফাডাঙ্গা থানার ওসি শাহ জালাল আলম জানান, নিহতের বাবা সায়েমউদ্দিন বিশ্বাস বাদী হয়ে বুধবার থানায় একটি হত্যা মামলার দাখিল করেছেন। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, বর্তমানে সে থানায় রয়েছে। তাকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।





