চলতি মাসের ১০ তারিখে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, এরপরেও জটিলতা এবং সংঘর্ষ থামেনি। ইসরাইলের অভিযান এখনও অব্যাহত থাকায় এই পরিস্থিতির অবনতি করছে। যুদ্ধবিরতির পর থেকেই ইসরাইলের হামলায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৩ জন নি:শ্বাস গ্রহণ করেছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩২৪ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শনিবার এই তথ্য নিশ্চিত করে প্রকাশিত বিবৃতিতে জানায়, গত দুদিনে গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় ১৯ জন নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন। পাশাপাশি, শনিবার ভোরে বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি গুলির আঘাতে কমপক্ষে ছয়জন ফিলিস্তিনি আহত হন।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি গণহত্যায় এখন পর্যন্ত মোট ৬৮ হাজার ৫১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় এক লাখ ৭০ হাজার ৩৮২ জন আহত হয়েছেন।পুরো এই সংঘর্ষে বহু জীবন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
শান্তির জন্য শুরু হয়েছিল ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার চেষ্টা। এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি মূলত আমেরিকার ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ীই হয়, যেখানে প্রথম পর্যায়ে ইসরাইলি জিম্মি মুক্তি ও বন্দি বিনিময় গুরুত্ব পেয়েছিল।
তবে, গাজার সরকারি মিডিয়া জানিয়েছে, ইসরাইল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ৮০ বার এই বিরতিকে লঙ্ঘন করেছে। তারা বিভিন্ন এলাকা ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। রাফা শহরের উত্তর-পশ্চিমে ইসরাইলি গুলিতে এক ফিলিস্তিনি শিশুর গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, খান ইউনুসের পূর্বে বানি সুহাইলায় একটি গাড়িতে গুলি চালানোর ঘটনায় দুই বেসামরিক ব্যক্তি আহত হন। শুক্রবার মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহতে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী, যেখানে দুই ফিলিস্তিনি ভাই নিহত হন। তাছাড়া, দেইর আল-বালাহায় বিস্ফোরণ ও কামান হামলার ঘটনাও ঘটেছে, যা ইসরাইলের দাবি অনুযায়ী তারা ‘ইয়ালো লাইন’ অতিক্রম করেছিল।
হামাস জানিয়েছে, তারা ২০ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং ৯ জনের লাশ ফেরত নিয়েছে। আরও বাকি লাশ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্তর্জাতিকভাবে, ইউনাইটেড ন্যাশনের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিএ গাজায় মানবিক সহায়তা চালিয়ে যেতে ইসরাইলের অনুমতি চেয়েছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, ইসরাইলের বর্তমান পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এই পরিস্থিতিতে শান্তি ও মানবিক আপদ মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে এই সংকট দ্রুত সমাধান হয় এবং গাজার মানুষের জীবন নিরাপদ ও স্বাভাবিক হতে পারে।





