মঙ্গলবার, ২৮শে অক্টোবর, ২০২৫, ১২ই কার্তিক, ১৪৩২

পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ, বিকল্প পথে নীতি গ্রহণ করছে আফগানিস্তান

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যিক সীমান্তপথগুলো পনেরো দিন ধরে বন্ধ থাকায় উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছেন। সরাসরি ও পরোক্ষভাবে কোটি কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছেন আফগান ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতির কারণে আফগানিস্তানের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন বিকল্প পথ খুঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের লক্ষ্য হলো, আফগান কৃষক, ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য আরও সুফলপূর্ণ বাজার ও পরিবহন ব্যবস্থা তৈরি করা। আফগানিস্তানের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী নূরুদ্দিন আজিজি বলেন, সীমান্ত বন্ধের কারণে আফগান পণ্য রপ্তানি ও ট্রানজিট বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরেই বিকল্প বাণিজ্যপথ নির্মাণে কাজ করছে, এখন আরও গতি দিয়েছে এই প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি যাতে আফগান পণ্য দ্রুত আঞ্চলিক বাজারে পৌঁছাতে পারে।’ অন্যদিকে, আফগানিস্তান–পাকিস্তান যৌথ বাণিজ্য চেম্বার দাবি করেছে, সীমান্ত বন্ধ থাকার ফলজ in ক্ষতির মুখে পড়েছে দু’দেশের বেসরকারি খাত। রপ্তানি ও ট্রানজিট কার্যত বন্ধ হয়েছে। তারা বলেছে, অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে হলে রাজনৈতিক দিক থেকে আলাদা করে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে হবে। নাকিবুল্লাহ সাফি নামে চেম্বারের প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘উভয় দেশের বেসরকারি খাত নিয়ে তাঁদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় যোগাযোগ রাখছে, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে দুর্ভাগ্যবশত বিষয়টি এখন রাজনৈতিক হয়ে পড়েছে। যদি এটি কেবল ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে হতো, তাহলে সীমান্ত পুনরায় খোলার সম্ভাবনা সহজে দেখা যেত।’ কিছু আফগান ব্যবসায়ী বলছেন, সীমান্ত বন্ধের ফলে অনেক রপ্তানি পণ্য নষ্ট হয়ে গেছে। তবে তারা মনে করেন, বিকল্প বাজার ও বন্দরে রপ্তানি সক্ষমতা বাড়ানো পাকিস্তানের প্রতি আফগানিস্তানের বাণিজ্যিক নির্ভরতা কমাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। ব্যবসায়ী ওমিদ হায়দারি বলছেন, ‘তোরখাম, গুলাম খান ও স্পিন বলাদাক থেকে রপ্তানি প্রায়ই বাধা দেয়, ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। যদি সরকার নীমরোজ ও ইসলাম কালা বন্দরে আরও সুবিধা দিয়ে তুরস্ক ও ভারতের মতো বাজারে রপ্তানি বাড়ায়, তাহলে তা বড় ধরনের অগ্রগতি হবে।’ অন্যদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য ট্রানজিট সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ না হওয়া পর্যন্ত সীমান্ত বন্ধ থাকবে। পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির আন্দরাবি বলেন, ‘পাকিস্তানি নাগরিকের জীবন যে কোন বাণিজ্যপণ্যের চেয়ে আরও মূল্যবান। তাই এ বিষয়টি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’

পোস্টটি শেয়ার করুন