দেশের রেলওয়ে খাতে এক গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার আধুনিকায়ন ও উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি বিশাল প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রেল পরিবেশনের এই কেন্দ্রটি আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত হয়ে কার্যকরভাবে সামনের দিনগুলোতে আরও বৃহৎ আকারে রেল কোচ, বগি ও ওয়াগন উৎপাদনে সক্ষম হবে।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের সম্ভাব্যতা পরীক্ষা ও চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) একটি প্রতিনিধি দল গত মঙ্গলবার সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভিন্ন কার্যক্রম ও অবকাঠামো সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর এডিবি উইং চিফ এস এম জাকারিয়া হক, এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হুই ইউন জিওংসহ অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ, কর্মব্যবস্থাপক (ডাব্লিউএম) মমতাজুল হক ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তারা কারখানার বগি ও ওয়াগন শপ, ক্যারেজ নির্মাণ শপসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশে ঘুরে দেখতে থাকেন। এরপর বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ে বিশদ আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কারখানার বর্তমান পরিস্থিতি, মুখোমুখি হওয়া চ্যালেঞ্জ, সম্ভাব্য উন্নয়ন প্রকল্প ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। ডিএস শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ জানান, বৃহৎ এই প্রকল্পে দুটি উপকারখানা সম্প্রসারণ, আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ও উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি লক্ষ্য করা হয়েছে। এডিবি প্রতিনিধিদল তাদের এই প্রস্তাবনায় সন্তোষ প্রকাশ করে, দ্রুত কার্যক্রম শুরুের আশ্বাসও দেন।
তিনি আরও বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়বে। এতে স্থানীয় রেল কোচ, বগি ও ওয়াগন উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জিত হবে, পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বিশ্বের প্রাচীনতম রেলওয়ে ওয়ার্কশপগুলোর মধ্যে অন্যতম এই সৈয়দপুর কারখানা বর্তমানে পুরোনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করছে। তবে আধুনিকায়নের ফলে এটি একটি সমৃদ্ধ ও আধুনিক রেল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন্দ্র হিসেবে রূপ নিতে যাচ্ছে, যা দেশের রেলক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি আনবে।





