বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কার্যক্রম (ইউএনডিপি) একত্রে নতুন একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছে, যার মূল লক্ষ্য হলো দেশের প্রধান শহরগুলো, বিশেষ করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কার্বন নির্ভরতা কমানো। এই উদ্যোগের মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো ও পরিবেশের উন্নতি সাধন করা হবে। এই প্রকল্পের অর্থায়নে রয়েছে গ্লোবাল অ্যানভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)।
রোববার উন্মোচন হওয়া এই প্রকল্পের নাম ‘প্রমোটিং অ্যানার্জি-রিলেটেড লো কার্বন আরবান ডেভেলপমেন্ট’ (এলসিইউডি), যার মেয়াদ পাঁচ বছর। এর লক্ষ্য হল জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি, সৌর, বায়ু, জলবিদ্যুৎ ও জৈব শক্তির মতো নবায়নযোগ্য উৎসে বিনিয়োগ বাড়ানো, পাশাপাশি বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদন করে গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন কমানো।
প্রকল্পের বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থায়ী, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এটি চালু হয় জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন (কপ-৩০) এর আগেই, যা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
শনিবার রাজধানীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এই প্রকল্পের স্বাক্ষরিত অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে ইআরডির সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ ও ইউএনডিপির বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার নিজ নিজ পক্ষ থেকে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, এই প্রকল্পটি আমাদের শহরগুলোতে উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি ইউএনডিপিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে এই কার্যক্রম দেশের অন্যান্য শহরেও ছড়িয়ে দিতে হবে। স্টেফান লিলার উল্লেখ করেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের নগর উন্নয়নে কাজ করছে ইউএনডিপি, এবং নতুন এই প্রকল্প আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরও দৃঢ় করবে।
বিশেষ করে, এই উদ্যোগ দেশের টেকসই ও কম কার্বন নির্ভরশীল নগর উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ জানান, এই প্রকল্প দেশের অন্যান্য শহরেও রূপকথার দৃষ্টান্ত হয়ে উঠবে এবং সময়মতো কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
চুক্তি অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ সরদার এম. আসাদুজ্জামান, স্রেডার চেয়ারম্যান মোজাফফর আহমাদ ও নবায়নযোগ্য শক্তি উন্নয়ন পরিচালক প্রকৌশলী মো. মুজিবুর রহমান। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সব মহানগরীর জন্য একটি পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাহসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।





