বুধবার, ৫ই নভেম্বর, ২০২৫, ২০শে কার্তিক, ১৪৩২

এক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ তিনটি আসনে প্রার্থী হওয়ার অনুমতি চূড়ান্তকরণ

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন থেকে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ তিনটি আসন থেকে নির্বাচন করতে পারবেন। এই নতুন আইন সংস্কারের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ, যা নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গঠনের জন্য পোশাক তৈরি করছে। এই তথ্য মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে, নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ছিল একাধিক আসনে কোনো ব্যক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতা বন্ধ করা। তারা বলেছে, এই পরিবর্তনের মূল লক্ষ্য হলো ব্যয় কমানো এবং প্রভাবশালী প্রার্থী যাতে একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা। মূলত, দু’টি কারণ থাকছে: এক, উপনির্বাচনের ব্যয় হ্রাস এবং দুই, প্রকৃত প্রার্থীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি।

নির্বাচন কমিশনের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি জানিয়েছেন, ১৯৮৬ সালে প্রথমবারের মতো পাঁচটি আসনে একজনের প্রার্থী হওয়ার বিধান রাখা হয়। আগে আরপিওতে উল্লেখ ছিল না যে একজন ব্যক্তি কতটি আসনে ভোট দিতে পারবেন। সেই সময়ে, পাঁচটি আসন নির্দিষ্ট করা হয়েছিল, এবং ২০০৮-২০০৯ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে এই সংখ্যা কমিয়ে তিনটি করা হয়।

১৯৮৬ সালে সর্বোচ্চ পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ ছিল, কিন্তু এরপর থেকে এটি কমে আস্তে আস্তে তিনটি আসনে সীমাবদ্ধ করা হয়। নির্বাচন কমিশন তখন প্রস্তাব দেয়, একজন ব্যক্তি এক সময়ে তিনটি আসনে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না, এবং যদি কেউ একাধিক আসনে মনোনয়ন দাখিল করেন, তাহলে তার জন্য প্রতিটি অতিরিক্ত আসনের জন্য পাঁচ লাখ টাকা জামানত দিতে হবে। এরপর সেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়, যদি তিনি জয়লাভ করে সেই আসনগুলো ছেড়ে দেন।

বর্তমানে, এই প্রস্তাবনাটি আইনে রূপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, তবে সংবিধানে এখনও এই বিষয়ে কোনো সংশোধনী আনা হয়নি। সংবিধানের ৭১অনুচ্ছেদের (১) দফায় বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি এক সময়ে দুই বা ততোধিক আসনের সংসদ সদস্য হবেন না। অন্য দফায় এই পরিস্থিতি কিছু ফিরে আসে যখন তিঁনি একাধিক আসনে প্রার্থী হন; তখন তাকে তার সবচেয়ে শেষে নির্বাচন শেষ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ঘোষণা দিয়ে অন্যান্য আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করতে হয়।

২০১৮ সালে সংসদে এই বিষয়ে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করা হলেও, এর অগ্রগতি হয়নি। সংশোধনী প্রস্তাবে বলা হয়, একজন ব্যক্তি এক সময়ে বহু আসনে নির্বাচন করতে পারবে, যা সংবিধান ও আরপিওর মধ্যে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। এজন্য এই বিষয়ের ওপর নতুন করে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন পড়ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন