বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প ধারাবাহিকভাবে প্রবৃদ্ধির পথ অব্যাহত রেখেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাতের বাজার মূল্য ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করছে। এই তথ্যটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতি (বিএপিআই) এর নির্বাহী কমিটির মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জানানো হয়। এই সভা গত মঙ্গলবার বিএপিআই’র কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির এই সভার নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে ডিএসই ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের উপস্থিতিও ছিল। প্রকৃতপক্ষে, বুধবার ডিএসই থেকে এ তথ্যের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প বিশ্বের নির্বাচিত বাজারের একটি হিসেবে দাঁড়িয়েছে এবং দেশের চাহিদার প্রায় ৯৮ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হয়। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে এই খাতের বাজার মূল্য ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। দেশের মোট জিডিপির প্রায় ১.৮৩ শতাংশ সূচক এই শিল্পের অবদান।
বক্তারা আরও বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরে প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে পুঁজিপার্টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। নতুন বিনিয়োগ, গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়ন, পাশাপাশি উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পুঁজিবাজার এক গুরুত্বপূর্ণ অর্থায়ন উৎস হিসেবে বিবেচিত।
বিএপিআইয়ের সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির বলেন, শেয়ার বাজারে দীর্ঘমেয়াদি আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নীতি ও আইনগুলোতে স্থিতিশীলতা জরুরি। যদি তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলির জন্য করছাড়ার সুবিধা নিশ্চিত করা হয়, তবে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে আসবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে না শুধু মূলধন সংগ্রহ হয়, বরং এটি কোম্পানির স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।
ডিএসই’র চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম জানান, পুঁজিবাজারকে আরও কার্যকর ও বিনিয়োগবান্ধব করে তুলতে ডিএসই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তিনি জানান, ব্লু-চিপ কোম্পানিগুলির আইপিও দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য দুই মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, বাজারে তথ্যপ্রবাহ বাড়ানোর জন্য ‘সেন্ট্রাল ইনফরমেশন আপলোড সিস্টেম’ চালু হচ্ছে।
অন্যান্য বক্তারা বলেছিলেন, তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাড়বে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আরও আকৃষ্ট হবে। তারা ‘এসএমই ও অলটারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ছোট ও বড় সব ধরনের কোম্পানির বাজারে আসার সুযোগের কথাও উল্লেখ করেন। আরো বলেন, বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্প্রসারণে দীর্ঘমেয়াদি মূলধন অপরিহার্য, যা ব্যাংক পরিবর্তে পুঁজিবাজার থেকে সংগ্রহ করলে খরচ ও ঝুঁকি কম হবে।
ডিএসই চেয়ারম্যান সংক্ষেপে বলেছিলেন, ‘নীতিগত সহযোগিতা ও যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমেই পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করা সম্ভব। শিল্প খাত ও স্টক এক্সচেঞ্জের একসাথে কাজ করলে জাতীয় অর্থনীতি আরো এগিয়ে যাবে।’





