সুহাইল সাত্তারের বয়স ৫০ বছর। তার ছেলে ইয়াহিয়ার বয়স মাত্র ১৭। বাবা-ছেলে দুজন মিলে গত বৃহস্পতিবার ক্রিকেট ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় লিখেছেন। এই দিনই তারা হন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম প্রকাশ্যে একসঙ্গে খেলতে নামা বাবা-ছেলে জুটি।
তাদের এই ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু হলো ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজ। স্বাগতিক দলের হয়ে মাঠে নামেন সুহাইল ও ইয়াহিয়া, যেখানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই ছোট দেশটি এই বছরই আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ পেয়েছে। এই ম্যাচটি ছিল তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ফলাফলটি খুব সুখকর ছিল না—তিমুর-লেস্তে হেরেছিল ১০ উইকেটে। তবে এই ঘটনাটি এখন ইতিহাসে জায়গা করে নিল। ভবিষ্যতে হয়তো আরও বাবা–ছেলে একসঙ্গে খেলতে দেখা যাবে, কিন্তু ‘প্রথম’ হওয়ার গৌরব একদমই আলাদা।
আর শুধু পুরুষ ক্রিকেটেই নয়, মেয়েদের ক্রিকেটেও এ রকম এক নজির নির্মাণ হয়েছে। সুইজারল্যান্ডের নারী ক্রিকেট দলের ৪৫ বছর বয়সী মেট্টি ফার্নান্দেজ ও তার ১৭ বছর বয়সি মেয়ে নায়না মেট্টি সাজু এ বছরের শুরুতে একসঙ্গে খেলেছেন ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
অধিকৃত বা স্বাভাবিকভাবে খেলা বাবাছেলাদের এই রকম নজির অবশ্য ঘরোয়া ক্রিকেটেও দেখা যায়। যেমন, কিংবদন্তি শিবনারায়ণ চন্দরপল ও তার ছেলে তেজনারায়ণ চন্দরপল গায়ানা ক্রিকেটে ১১টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন। ২০১৪ সালে উইন্ডডোয়ার্ড আইল্যান্ডসের বিপক্ষে এক ম্যাচে তারা অধিনায়ক বাবার অধীনে খেলেছিলেন ২৯ বছর বয়সি তেজনা।
এছাড়া, ২০১৪ সালে আফগানিস্তানের শপাগিজা ক্রিকেট লিগের ফাইনালে বাবা-ছেলে মুখোমুখি হয়েছিলেন। সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও তার ছেলে হাসান ইশাখিলের এই লড়াইও ছিল বিশেষ। নবীর দল আইনাক নাইটসকে ৮ উইকেটে হারাতে গিয়ে, হাসান ৩৪ বলে ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন আমো শার্কসের হয়ে।
আর গত বৃহস্পতিবার বালিতে অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক ম্যাচে ম্যাচের শুরুতে ব্যাট করে তিমুর-লেস্তে মাত্র ৬১ রানে অলআউট হয়। অন্যদিকে, সুহাইল ও ইয়াহিয়া কিছু সময় একসঙ্গে ব্যাটিং করেন, তবে দল আগে ব্যাট করে লক্ষ্য অর্জন করে মাত্র চার ওভায়।
সিরিজের আরও দুটি ম্যাচ খেলা হলেও প্রতিটি ম্যাচেই হার স্বীকার করতে হয় তাদের। অর্থাৎ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম তিন ম্যাচেই ১০ উইকেটে হেরে যায় তিমুর-লেস্তে। এটি নিশ্চিতভাবেই Spieler ধরে নেয়ার মতো এক অনন্য ইতিহাস।





