রবিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

অশোভন ভয়ানক হত্যাকাণ্ড: আশরাফুলকে হানি ট্র্যাপে ফেলে ২৬ টুকরো করেন বন্ধু জরেজ ও তার প্রেমিকা

রংপুরের ব্যবসায়ী আশরাফুল হককে ভয়ানক এক পরিকল্পনাজনিত ক্রাইমের শিকার করে লাশ ২৬ টুকরা করে ফেলা হয়েছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হলো তার বন্ধু জরেজ এবং তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার ওরফে কোহিনুর। র‍্যাব-৩ তাদেরকে কুমিল্লার লাকসামের বড় বিজরা এলাকার নিজ বাসা থেকে শনিবার গ্রেপ্তার করে। পরারপর, তারা এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা, লাশ গুমে সহায়তা ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ে জড়িত ছিল।

র‍্যাবের সংবাদকথা অনুযায়ী, আশরাফুল ১১ নভেম্বর রাতে বন্ধু জরেজের সাথে রংপুর থেকে ঢাকায় রওনা দেন। পরের দিন সকালে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্পের পাশে দুটি নীল ড্রামের মধ্যে আশরাফুলের অজ্ঞাত লাশের ২৬ টুকরা উদ্ধার করা হয়। আধার আনুকুলে পুলিশের বিশ্লেষণে নিহত আশরাফুলের দেহের সঙ্গে মিল পেয়েছে আশরাফুলেরই।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আশরাফুলের সঙ্গে জরেজের এক বছরেরও বেশি সময়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। জরেজ তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে লেনদেনের জন্য ১০ লাখ টাকা নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এর মধ্যে ৭ লাখ টাকা নিজে নেবে এবং ৩ লাখ টাকা শামীমা পাবে।

প্রেমের সম্পর্কের জালে জড়িয়ে, ১১ নভেম্বর আশরাফুলকে ঢাকায় নিয়ে আসে জরেজ ও শামীমা। সেখানে তাদের একটি ভাড়াযুক্ত বাসায় আশরাফুলকে মালটার জুসে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। অনতিবিলম্বে জরেজ তার মোবাইল দিয়ে আশরাফুলের অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে।

আশরাফুল অচেতন অবস্থায় ১২ নভেম্বর দুপুরে জরেজ তাকে হাতকড়া দিয়ে বেঁধে মাথায় কসটেপ দিয়ে ঢেকে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তার দেহে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। ১৩ নভেম্বর সকালে তারা লাশ ২৬ টুকরো করে দুটি ড্রামে ভরে চাপাতি দিয়ে বিভক্ত করে। তারপর সিএনজি ভাড়া করে ড্রাম দুটি সরিয়ে নেয়। হাইকোর্ট মাজার গেটের পাশে বড় গাছের নিচে ড্রামগুলো ফেলে যাবার চেষ্টা করে। পরে শামীমা কুমিল্লা এবং জরেজ রংপুরে পালিয়ে যায়।

র‍্যাবের তদন্তে জানা যায়, তারা হত্যার আলামত, রক্তমাখা পোশাক, দড়ি, কসটেপ ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে। শামীমাকে আদালত হস্তান্তর করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের प्रक्रिया শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে র‍্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক তৎপরতা পরিচালনা করছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন