রবিবার, ১৬ই নভেম্বর, ২০২৫, ১লা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবি: ২৬ বাংলাদেশিসহ নিহত ৪

উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলে একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে, যেখানে ২৬ বাংলাদেশিকে বহনকারী একটি নৌকা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় চার বাংলাদেশির মৃত্যু নিশ্চিত হওয়া গেছে। একই উপকূলে অর্ধশতাধিক সুদানি এবং আরও কিছু মিসরীয় নাগরিকসহ পৃথক এক নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। তবে এই দ্বিতীয় ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। সোমবার (১৬ নভেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, উত্তর-পশ্চিম লিবিয়ার আল-খোমস উপকূলে দুটি অভিবাসী নৌকা উল্টে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্টের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে এই নৌকাগুলোর দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রথম নৌকায় বাংলাদেশের ২৬ জন নাগরিক ছিলেন। তাদের মধ্যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

অপরদিকে, দ্বিতীয় নৌকায় ছিল মোট ৬৯ জন। এর মধ্যে দুজন মিসরীয় এবং বাকি ৬৭ জন সুদানি নাগরিক, যার মধ্যে আটজন শিশু। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিতদের উদ্ধার করে এবং মৃতের মরদেহ উদ্ধারসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করে।

বিশ্লেষকদের মতে, লিবিয়া এখন ইউরোপের অভিবাসী নাগরিকদের জন্য বেশ জনপ্রিয় এবং বিশেষ করে অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে ইউরোপে প্রবেশের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুট। গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়া অভিবাসীদের জন্য আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সেখানে সাড়ে ৮ লাখের বেশি অভিবাসী অবস্থান করছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও মিলিশিয়া সংঘর্ষের কারণে অভিবাসীরা নানা প্রতিশ্রুতির সম্মুখীন হচ্ছে।

অধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে, লিবিয়ায় শরণার্থীরা নিয়মিত অবিচার, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ইউরোপের দেশগুলো অবৈধ অভিবাসন রোধে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অর্থ সহায়তা দিলেও, যেখানে এই কোস্টগার্ডের সঙ্গে মিলিশিয়াদের সম্পর্ক রয়েছে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়া, ইউরোপে অভিবাসীদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা কমে যাওয়ায়, উত্তর আফ্রিকার এই রুটটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। পাশাপাশি, ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনাকারী দাতব্য সংস্থাগুলির উপর বিভিন্ন রাষ্ট্রের দমনমূলক পদক্ষেপে ঐ অঞ্চলের অভিবাসন পরিস্থিতির আরও চরম অবনতি ঘটছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন