শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫, ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

এনইআইআর বাতিল নয়, পুনর্গঠন চান মোবাইল ব্যবসায়ীরা

ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) বাস্তবায়ন নিয়ে দেশের মোবাইল বাজারে নতুন একটি সিন্ডিকেট গঠনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে—এমনটাই অভিযোগ করেছেন মোবাইল ব্যবসায়ীরা ভিডিও। সংগঠনের দাবি, দেশের মোট ব্যবসায়ীর প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশকে কার্যত এ প্রক্রিয়ার বাইরে রেখে, মাত্র ৩০ শতাংশ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষায় একটি স্বার্থান্বেষী চক্র এই সিন্ডিকেট তৈরি করতে চাইছে।

তাদের আরও অভিযোগ, পুরোপুরি এনইআইআর বাতিল করতে না চেয়ে, এক বছর সময় নিয়ে এই সিস্টেমটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোলটেবিল আলোচনা করার দাবি জানানো হয়েছে। বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি শামীম মোল্লা, কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম বিজনেস ফোরামের সভাপতি আরিফুর রহমান, শাহ আলম বোখারীসহ বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ীরা।

সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে প্রেস কনফারেন্স ভণ্ডুল করার জন্য বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক পিয়াসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, মঙ্গলবার রাত ৩টার সময় শুধুমাত্র এই সংবাদ সম্মেলন ঠেকানোর উদ্দেশ্যেই তাকে আটক করা হয়। তাদের দাবি, এই ঘটনা আসলে কিছু ব্র্যান্ড ও বাজার নিয়ন্ত্রণকারি স্বার্থ গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত।

একজন ব্যবসায়ী নেতা জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় এই সিন্ডিকেটই আমাদের সাধারণ সম্পাদককে টার্গেট করেছে। মোবাইল ব্যবসায়ীরা মনে করেন, তারা এনইআইআর সিস্টেমের পুরোপুরি বাতিল চায় না, বরং এক বছরের মধ্যে এই প্রক্রিয়াটির পুনর্গঠন ও বাস্তবায়নের জন্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিটিং করার দাবি জানাচ্ছেন।

আরিফুর রহমান বলছেন, ব্যাগেজ রুলস অনুযায়ী বৈধ মোবাইল সেট বিক্রির সুযোগ সীমিত হলে লাখো ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এনইআইআর চালুর ফলে মোবাইলের দাম আরও বাড়বে, যা সম্ভবত ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত কর বৃদ্ধির কারণে হবে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দিনমজুর, রিকশাচালক, দর্জি, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবার ও শিক্ষার্থীরা।

তিনি বলেছেন, গ্রে মার্কেটে কম দামে ভালো কনফিগারেশনের ফোন পাওয়ায় সাধারণ মানুষ দীর্ঘদিন উপকৃত হয়েছেন। তবে, আইনি ভিত্তিক ভবিষ্যতের এই বাজারে মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে গেলে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে। মাত্র ১৮টি লাইসেন্সধারীর মাধ্যমে পুরো বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেন তারা।

সংগঠনের অভিযোগ, বর্তমানে দেশের মোবাইল বাজারের প্রায় ২০ কোটি মানুষের মধ্যে মাত্র ১৮ জন লাইসেন্সধারী ব্যক্তি এই বাজারের নিয়ন্ত্রণ চালাচ্ছেন। এই সংখ্যাটা অযৌক্তিক ও অনবরত প্রতিযোগিতা বিঘ্নিত করে বলে তারা মনে করছেন। তাদের দাবি, বাজারের স্বাচ্ছন্দ্য ও প্রতিযোগিতা চালু রাখতে লাইসেন্সের সংখ্যা অন্তত পাঁচ হাজারের বেশি করা উচিত।

অंतিম এক হুঁশিয়ারিতে নেতারা জানান, এই সিন্ডিকেটের প্রভাব এবং এনইআইআর বাস্তবায়নের মাধ্যমে মোবাইল ব্যবহারকারীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা আরও বলেন, জনগণের ক্ষোভ বাড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। নেতারা সতর্ক করে বলেছেন, জনগণকে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি খারাপ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন