পাকিস্তান তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকে শক্তিশালী করার জন্য আরব সাগরে একটি কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ঘোষণা সম্প্রতি দিয়েছে পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেড (পিপিএল), যা পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে জানা গেছে, সিন্ধু উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে, সুজাওয়াল এলাকায় এই কৃত্রিম দ্বীপটি তৈরি হচ্ছে। ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত তেল-গ্যাস সম্মেলনের সাইডলাইনে পিপিএলের মহাব্যবস্থাপক আরশাদ পালেকার এই পরিকল্পনার বিস্তারিত জানান। তিনি বলেন, ছয় ফুট উচ্চতার প্ল্যাটফর্মটি জোয়া-ভাটার প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে এবং এটি দিনরাত অবিরাম অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করবে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জুলাই মাসে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাকিস্তানের ‘বিরাট তেল মজুত’ নিয়ে আগ্রহ প্রকাশের পর থেকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে খনন কার্যক্রমে গতি দেখা গেছে। এখন থেকে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানীয় প্রতিষ্ঠান—পিপিএল, মারি এনার্জিস লিমিটেড ও প্রাইম ইন্টারন্যাশনাল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস—উপকূলীয় অনুসন্ধানের লাইসেন্স পেয়েছে। পালেকার মতে, এই প্রকল্পটি পাকিস্তানের জন্য প্রথম হলেও, আবুধাবিতে সংস্থাটির সফল ড্রিলিং-এর অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছে। তিনি আরও জানান, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এই দ্বীপের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে এবং এরপর থেকেই কার্যক্রম শুরু হবে। পরিকল্পনা রয়েছে, প্রায় ২৫টি কূপ খনন করার। অন্যদিকে, বৈশ্বিক জ্বালানি ব্যবসায়ীর দাবি, পাকিস্তানে জাহাজের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে বড় লো-সালফার ফুয়েল অয়েল (VLSFO) সরবরাহ করা হয়েছে, যেটি সিঙ্গারিজকো শোধনাগার থেকে এসেছে। এই জ্বালানি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী প্রস্তুত এবং এর মাধ্যমে পাকিস্তানে পরিবেশসম্মত সামুদ্রিক জ্বালানি রফতানি ও সংরক্ষণ আরও বৃদ্ধি পাবে। আবারও, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় আধা-সামরিক অভিযান চালিয়ে ২৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়, যেখানে বলা হয় নিহত জঙ্গিরা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা এর সহযোগী গোষ্ঠীর সদস্য। এর আগে, এক সপ্তাহের মধ্যে, ইসলামাবাদে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বলেছে, এই জঙ্গিরা বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অংশ, যাদের নির্মূলের জন্য তারা নিরলসভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযান কুররম জেলায় পরিচালিত হয়েছে, যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি তৎপরতা চলে আসছে। এই অঞ্চলটিতে ২০২১ সালে তালেবান সরকারের ফেরার পর থেকে সহিংসতা আরও বেড়েছে। পাকিস্তানের বক্তব্য, বিদেশি মদদে গঠিত এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে, এবং তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, আফগান সরকার এই সব গোষ্ঠীর আশ্রয় দিচ্ছে। এতে করে তাদের পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে উঠছে। সম্প্রতি, পাকিস্তানের অভিযোগ, ভারতের সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকেও তারা সহায়তা করছে দেশটি। যদিও ভারত এবং আফগানিস্তান এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে এক আত্মঘাতী হামলায় ১২ জনের মৃত্যু হয় এবং বহু মানুষ আহত হন। পাকিস্তানের দাবি, এই হামলার পরিকল্পনা আফগানিস্তান থেকে হয়েছে এবং পাকিস্তানি তালেবান এর দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনাগুলোর ফলে পাকিস্তান-আফগানিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত মাসে সীমান্তে ব্যাপক সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়, যা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সবচেয়ে গুরুতর সংঘর্ষ। এরপর থেকে উভয় দেশই সীমান্ত বন্ধ রেখেছে।





