ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বৃহস্পতিবার বলেছেন, দেশের রাজধানী তেহরান থেকে দ্রুত স্থানান্তর করা দরকার, কারণ অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও তীব্র পানিসংকটের কারণে শহরটি বিপদে পড়ছে। তিনি উল্লেখ করেন, এ ধারণাটি তিনি আগেও উঠে ধরেছিলেন, বিশেষত এ বছর তেহরানে বৃষ্টিপাত শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে কম হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘বাস্তবতা হলো, আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। রাজধানী স্থানান্তর একটি জরুরি প্রয়োজন। আমরা এ অঞ্চলের ওপর অতিরিক্ত জনগণ এবং নির্মাণের বোঝা চাপাতে পারছি না। উন্নয়ন করতে পারি, কিন্তু পানিসংকটের সমাধান করতে পারছি না।’’ চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি সতর্ক করেছিলেন, শীতের আগে যদি বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে হয়তো রাজধানীকে পুরোপুরি খালি করে দিতে হতে পারে—যদিও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি। তেহরান শহর আলবোর্জ পর্বতমালার দক্ষিণে অবস্থিত, যেখানে গরম ও শুষ্ক গ্রীষ্মের মৌসুমে শরতের বৃষ্টি এবং শীতের তুষারপাত সাধারণ। তবে এই সময়ের অপূরণীয় বরফে ঢাকা পর্বতচূড়াগুলো এখনো সম্পূর্ণ শুষ্ক। জলসংকট মোকাবিলায় সরকার তেহরানের এক কোটি বাসিন্দার জন্য পানির সরবরাহ পর্যায়ক্রমে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। পেজেশকিয়ানের শহরটি দ্রুত স্থানান্তর করার এই ধারণা সমালোচনার মুখে পড়েছে, বিশেষ করে স্থানীয় গণমাধ্যমে। সংস্কারপন্থী দৈনিক হাম মিহান তার মন্তব্যকে ‘রসিকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে। এরপর সরকার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্য মূলত পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝানোর জন্য ছিলো, এটি কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা নয়। গত সপ্তাহে ইরানের সরকার ঘোষণা করেছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়াতে তারা ক্লাউড সিডিং বা মেঘে বীজ ছড়ানোর কার্যক্রম শুরু করেছে। পূর্বে জানানো হয়, রাজধানী সরানোর কারণগুলো হলো—তীব্র যানজট, জলসংকট, সম্পদ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতা এবং মারাত্মক বায়ুদূষণ। এ বছরের জানুয়ারিতে সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানিয়েছিলেন, রাজধানী দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত তুলনামূলকভাবে অনুন্নত মাকরান অঞ্চলে স্থানান্তরের পরিকল্পনা এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে; তবে এর বিরুদ্ধে সমালোচনা অব্যাহত আছে।





