মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এবিসি নিউজের প্রধান সংবাদদাতা মেরি ব্রুসের দিকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই ঘটনাটি ঘটে যখন ব্রুস সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কাছে সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে প্রশ্ন করেন। ট্রাম্প তখন জানান যে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, যুবরাজের নির্দেশে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল, তবে তিনি ব্রুসকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রশ্ন করে আমাদের অতিথিকে অস্বস্তিতে ফেলবেন না।’ তিনি এর প্রতিক্রিয়ায় প্রশ্নটিকে “ভয়ংকর, ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং বাজে” বলে অভিহিত করেন। ট্রাম্প আরও যোগ করেন, ‘অনেকে এই ভদ্রলোককে (খাসোগি) পছন্দ করত না। আপনি তাকে পছন্দ করুন বা না করুন, মাঝে মাঝে এমন ঘটনা ঘটে।’ এই কথোপকথনগুলো সৌদি আরবের এজেন্টদের হাতে খাসোগির মৃত্যু ও অঙ্গচ্ছেদের ঘটনার পর যুবরাজের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ঘটে। ট্রাম্পের এই আক্রমণ sobবাদী ধরণের, বিশেষ করে ব্রুসের প্রশ্নের জন্য তাঁর অপ্রস্তুত অবস্থার কারণে। যখন ব্রুস জিজ্ঞেস করেন কেন তিনি এপস্টিনের সাথে সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো প্রকাশ করেননি, তখন ট্রাম্প তাকে অপমান করে বলেন, ‘প্রশ্ন করা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু আপনার আচরণ নিয়ে আমার সমস্যা।’ তিনি এ কথাও বলেন, ‘আপনি একজন জঘন্য রিপোর্টার। আপনি যেভাবে প্রশ্ন করেন, সেটাই আপত্তিকর।’ ট্রাম্প অভিযোগ করেন, এবিসি নিউজ একটি ‘খারাপ কোম্পানি’ এবং এনজিও লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া উচিত। এই বিষয়ে তিনি নেটওয়ার্কের লাইসেন্স বাতিলের জন্য শীর্ষ নিয়ন্ত্রণকারী ব্রেনডান কারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রিক অধিকার সংরক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল প্রেসক্লাব ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, “খাসোগির মৃত্যু সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আক্রমণ।” মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা উল্লেখ করে তারা উল্লেখ করে, ‘একজন সাংবাদিককে হত্যার ঘটনা ছোট করে দেখা কিংবা তার পক্ষে কথা বলা বাস্তব জগতের জন্য হুমকি।’ এদিকে, ট্রাম্প নিয়মিতই মিডিয়াকে অশোভন ভাষায় আক্রমণ করেন। গত শুক্রবার এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে, ক্যাথরিন লুসি যখন তাঁর কাছে এপস্টিনের বিষয়ে প্রশ্ন করেন, তখন ট্রাম্প তাকে ‘চুপ’ করতে বলেন এবং অবজ্ঞাসূচক ভাষায় ‘পিগি’ বলে ডাকেন। সাবেক মিস ইউনিভার্স অ্যালিসিয়া মাচাদো এ ধরনের অশোভন ভাষার ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প শেষমেষ ব্রুসের প্রশ্নে উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আপনার উচিত ফিরে যাওয়া এবং কীভাবে রিপোর্টার হতে হয়, তা শেখা।’ এবং তিনি আরও বলেন, ‘আপনার কাছ থেকে আর কোনো প্রশ্ন নেওয়া হবে না।’
