রবিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৫, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

নান্দাইলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও থানার পাশে গার্বেজ পয়েন্টের স্বাস্থ্যঝুঁকি গুরুতর জনমনে ক্ষোভ

নান্দাইল মডেল থানা সংলগ্ন এলাকায় পৌরসভার উদ্যোগে নতুন করে একটি গার্বেজ ফেলার স্থান (Garbage Dumping Zone) নির্মাণ কাজ চলমান। তবে এই প্রকল্পের স্থান radius মাত্র ১০০ মিটার পূর্বে অবস্থিত চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং পশ্চিমে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থাকায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি, প্রকল্পের ঠিক ১০ মিটার দক্ষিণে রয়েছে নান্দাইল মডেল থানা এবং উত্তরে ময়মনসিংহ–কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক, যেখানে প্রতিদিন হাজারো পথচারী চলাচল করেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন— এই গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো ও ব্যস্ত মহাসড়কের কাছাকাছি এই গার্বেজ পয়েন্টের নির্মাণ হলে দূষণ, দুর্গন্ধ, ছড়ানো বর্জ্য, ধোঁয়া এবং পোকামাকড়ের কারণে স্বাস্থ্যের ব্যাপক ঝুঁকি তৈরি হবে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

একজন অভিভাবক বলেন— “শিশুদের প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। বর্জ্য ফেললে বাতাসে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সিদ্ধান্তটি দ্রুত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।” অন্য একজন শিক্ষক বলেন— “বিদ্যালয়ের কাছাকাছি এ ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র কোনওভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। শিক্ষার্থীরা দুর্গন্ধের মধ্যে ক্লাস করবে—এটা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।”

নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন— “নারী শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্বাস্থ্যের ঝুঁকিতে পড়বে। এখানে বিকল্প জায়গা থাকার পরও এই স্থানে বর্জ্য ফেলা একে অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বলে মনে হয়।”

স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা জানাচ্ছেন— “গার্বেজ পয়েন্টটি বিদ্যালয় ও থানার কাছে থাকলে মশা, মাছি, জীবাণু এবং দুর্গন্ধের কারণে ডেঙ্গু, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাবে। দীর্ঘমেয়াদি মানসিক স্বাস্থ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।”

পথচারী এবং ব্যবসায়ীরাও এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন ব্যবসায়ী বলছেন— “মহাসড়কের লাগুয়া এলাকায় বর্জ্যের স্তূপ থাকলে দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এতে ব্যবসার পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

বিশেষ করে উল্লেখ করা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর সদ্য বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিনা ছাত্তার উক্ত স্থানে আধুনিক পৌর পার্ক নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। তবে কিছু দিনের মধ্যেই সেখানে নির্মাণের নামে ময়লা ও আবর্জনা জমতে শুরু করে, যা জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

উপজেলা এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার পাশে এই গার্বেজ ফেলার স্থান নির্মাণ করোনা ও শিক্ষার পরিবেশের জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এজন্য স্থানীয়রা পৌর প্রশাসনের সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনা এবং দ্রুত উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানাচ্ছেন। অন্যথায়, পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করছেন সচেতন মহল।

পোস্টটি শেয়ার করুন