রবিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৫, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

গাজায় ফ্রন্টলাইন আরও ভেতরে সরিয়েছে ইসরায়েল

গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সেনারা শহরের ভিতরে আরও গভীর প্রান্তে প্রবেশ করেছে এবং তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ নামে পরিচিত সীমারেখা সম্প্রসারিত করেছে। এর ফলে আশ-শাফ, আন-নাজ্জাজ ও বাগদাদ স্ট্রিট এলাকার অনেক ফিলিস্তিনি পরিবার ট্যাংকের অগ্রযাত্রার মধ্যে আটকা পড়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানায় যে, ইসরায়েলি বাহিনী সীমার চিহ্নগুলো সরিয়ে প্রায় ৩০০ মিটার ভেতরে প্রবেশ করেছে। হামলার কারণে অসংখ্য পরিবার অচিরেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে বলে তারা ব্যাখ্যাকে উল্লেখ করে। তারা আরও জানায়, সীমারেখা সম্প্রসারণটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের স্পষ্ট অবজ্ঞা।

শুক্রবার সকাল থেকেই দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের পূর্ব দিকে ‘ইয়েলো লাইন’-এর ভেতর থেকে ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলা অব্যাহত ছিল বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এসব হামলায় একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও কিছু মানুষ আহত হয়েছেন।

এর আগে, গত বুধবার গাজা সিটি ও খান ইউনুসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে প্রতিদিনই ইসরায়েল আকাশ, স্থল ও মরুভূমিতে গুলি চালিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪০০ এর বেশি ঘটনা তালিকাভুক্ত হয়েছে, যেখানে ৩০০ এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।

গাজার কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার ও তুরস্ককে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে হামলা বন্ধ, খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসাসহায়তা, এবং অবকাঠামোর সরঞ্জাম সরবরাহ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।

চুক্তিতে উল্লেখিত ‘ইয়েলো লাইন’ হলো একটি অদৃশ্য সীমা, যেখানে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরে ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদের অবস্থান পুনর্গঠিত করে। এভাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার অর্ধেকের বেশি অংশে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সীমার কাছাকাছি গেলে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো ঘটনাও নিয়মিত ঘটনা।

জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ও বিটসেলেমসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে— গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান গণহত্যার শামিল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৬৯,৫৪৬ জন নিহত এবং একজনের বেশি আহত হয়েছে। গাজার বড় অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, বহু মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন