আসন্ন নির্বাচনে ইনসাফ ও ন্যায়নিষ্ঠা ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য আলেম-ওলামাদের দোয়া ও সমর্থন কামনা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাকির রহমান। তিনি উল্লেখ করেন, রাষ্ট্র ও সরকারের পরিচালনায় বিএনপির মূলমন্ত্র হবে ন্যায়পরায়ণতা, এবং মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ন্যায়পরায়ণতার আদর্শকে ধারণ করে একটি ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েছে দলটি। এজন্য তিনি দেশের সব ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন, এবং আলেম-ওলামা মাশায়েখের দোয়া ও সমর্থন চেয়েছেন।
রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনটি আয়োজন করে সমন্বিত ইমাম খতিব পরিষদ।
তারেক রহমান বলেন, দীর্ঘ দেড় দশকের শাসন-শোষণ ও তত্ত্বাবধানে নতুন প্রমাণ হয়েছে যে, ইমান, ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে ঐক্যবদ্ধ থাকাই মূল চাবিকাঠি। দেশ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি এমন একটি সমাজব্যবস্থার পক্ষে, যেখানে মুসলমানরা নির্ভয়ে কোরআন ও সুন্নাহ অনুসারে জীবন পরিচালনা করতে পারে। তারা নিরঙ্কোচে ইবাদত করবেন ও অন্য ধর্মের মানুষরা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন।
তারেক রহমান ঘোষণা করেন, সমাজ সংস্কারক হিসেবে যে ইমাম, খতিব এবং মুয়াজ্জিনরা আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তাদের জন্য রাষ্ট্রের ভাবনা অনুযায়ী অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়া জরুরি। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের ক্ষমতা পেলে তাদের জন্য মাসিক সম্মানী প্রদান ও তাদের আর্থিক স্বাবলম্বী করে তোলার জন্য বিশেষ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবেন বিএনপি। এর পাশাপাশি, ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে অবকাঠামো উন্নয়নে একাধিক পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ইমাম, খতিব ও মুয়াজ্জিনদের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দাবি বাস্তবায়নে সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে চাকরির নিশ্চয়তা সুরক্ষার জন্য সার্ভিস রুল প্রণয়নের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই উদ্যোগ দ্রুত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নেওয়া হবে। অন্যান্য দাবি পুরণেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তবে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, যারা আবেদন করবেন, তাদের যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, একটি বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি চাই, ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধের উপর কেউ ভ্রান্ত ধারণা বা মতবিরোধ সৃষ্টি না করে, যাতে সমাজে শান্তি বজায় থাকে। এই জন্য নেতৃস্থানীয় উলামাদের সতর্কভাবে ভূমিকা পালন করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। দলটি নিশ্চিত করে, মুসলমানরা নির্ভয়ে কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে পারবে, যদি তাদের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতি সম্মান রাখা হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা শফিকুর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, জমিয়তে উলামায় ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজি ও হেফাজত নেতা জুনাইদ আল হাবিবসহ অন্যান্যরা।





