রমজান পালনের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে সওয়াবিন তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা, মটর ডাল এবং খেজুরের আমদানি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পণ্যের চাহিদা রমজানে সাধারণত বেশি থাকায়, চলতি বছর সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দেশের ব্যবসায়ীরা এশিয়াবাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বেশি পরিমাণে এলসি (ঋণপত্র) খোলার মাধ্যমে আমদানি কার্যক্রম চালিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, এই সময়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেল ৩৬ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, মসুর ডাল ৮৭ শতাংশ, ছোলা ২৭ শতাংশ, মটর ডাল ২৯৪ শতাংশ ও খেজুরের আমদানি ২৩১ শতাংশ বেড়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রমজান মাস শুরু হতে পারে।
প্রথমে জানানো হয়, রমজানে তেল ও চিনি সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে। তাই শীর্ষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠীগুলো সেপ্টেম্বরে-অক্টোবর মাসে এ দুই পণ্যের এলসি খোলার সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছে। এর পাশাপাশি, রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য আগে থেকেই প্রচুর পরিমাণে সংগ্রহ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নভেম্বর ও ডিসেম্বরেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেশির ভাগ পণ্য আগেই আমদানি করা হলেও, অবশিষ্ট পণ্য রোজার শুরু হওয়ার এক মাস আগপর্যন্ত আসতে থাকবে। তবে, সেপ্টেম্বরেই রমজানের জন্য প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের এলসি বেশি করে খোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মোট ৬.২৯ বিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ৫.৬৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের এলসি খোলা হয়েছে। এ সময়ে, ৪ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৫ টন সয়াবিন তেলের আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। গত বছরের তুলনায় এই সময়ে সয়াবিনের আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্য দিকে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ২ লাখ ৯২ হাজার ৫৭২ টন চিনি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে, যা前年ের তুলনায় বেশি। ডাল, ছোলা এবং খেজুরের আমদানিও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দুই মাসে ডালের আমদানি জন্য ৫০ হাজার ৩৫৫ টনের এলসি খোলা হয়েছে, ছোলার জন্য ৫৪ হাজার ৫১৬ টন, আর খেজুরের জন্য ১০ হাজার ১৬৫ টন। পাশাপাশি, মটর ডালের আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৮১০ টন, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪১ হাজার ৮১৫ টন।
আমদানিকারকরা জানাচ্ছেন, দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সংকট এখন আর থাকছে না, যার ফলস্বরূপ এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হচ্ছে। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে দেশের ডলার সংকট শুরু হয়েছিল, ফলে আমদানি কঠোরভাবে সীমিত হয়ে পড়েছিল। তবে বর্তমানে এই সমস্যা সমাধান হয়েছে। তাছাড়া, এলসি খোলার ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিনের বাধ্যবাধকতা না থাকায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক রমজান সময় ভোগ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মার্জিনে ছাড় দিয়ে থাকে, যা আমদানিকারকদের জন্য সুবিধাজনক।





