শুক্রবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৫, ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২

চাটখিলে মানব পাচার চক্রের শিকার হলো দুই যুবক, খেপে উঠেছে এলাকাবাসী

চাটখিল উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে সক্রিয় মানব পাচারকারী একটি চক্রের শিকার হয়ে দুজন যুবক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই চক্রটি মূলত মধ্যপ্রাচ্যে মানব পাচার করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। অভিযুক্তরা রুবিনা আক্তার শিল্পী ও তার দুই ছেলে— মোঃ ছিদ্দিক আকবর সানি এবং সোলেমান হোসেন রণি— বিভিন্ন মাধ্যমে এই অপকর্ম চালিয়ে আসছেন বলে জানা যায়। তারা এ চক্রের সদস্য বলে স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। এই মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নানান থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলা ও অভিযোগ জমা পড়েছে।

জানা গেছে, মোঃ ছিদ্দিক আকবর সানি ও সোলেমান হোসেন রণি বর্তমানে সৌদি আরবে আছেন। চাকরি দেয়ার নাম করে তারা পরিবার থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। প্রথমে নির্ধারিত অঙ্কের অর্থ নেওয়ার পর, পরে জোড়পূর্বক অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভুক্তভোগীদের আতঙ্কে ফেলে রাখেন।

একইভাবে, পরানপুরের আবু মোঃ নুর হোসেনের ছেলে নাইমুল ইসলাম সজলকে সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়ার জন্য চক্রটি সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। নতুন চাকরির নাম করে সেসব টাকা নিয়ে কিছুদিন পর তাকে আটকে রেখে আরও ভয়ভীতি দেখানো হয়। বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিয়ে মোট ৯ লাখ টাকা আদায় করা হয়। এর ফলে সজলসহ তার পরিবারের মানুষজন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ইতোপূর্বে এই বিষয়ে নোয়াখালী চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন তার বাবা। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য নোয়াখালীর ডিবি সদস্যদের নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে, একই এলাকার শাহজান মাষ্টারের ছেলে রহমান হোসেন রায়হানকেও একই চক্রটি সৌদি আরবের চাকরির নাম করে সাড়ে ৬ লাখ টাকা দাবী করে। পরে, চাকরি না দিয়ে তাকে আটকে রেখে নতুন করে আরও টাকা দাবি করেন। এই বিষয়েও রায়হানের মা রুমকি আক্তার চাটখিল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

আবু মোঃ নুর হোসেন বলেন, তার ছেলে নাইমুল ইসলাম সজলকে সৌদি আরবে নিয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে এই চক্র সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেয়। পরে, তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা প্রদান করেন তিনি। কিছুদিন পর চক্রটি সজলকে সৌদি আবর নিয়ে যায়, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী কাজ না দিয়ে তাকে আটক করে রাখে। ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আরও ৩.৫ লাখসহ মোট ৯ লাখ টাকা আদায় করা হয়।

রুবিনা আক্তার শিল্পী এই বিষয়ে কল করলে তিনি বলেন, বিদেশে পৌঁছে কিছু লোক চাকরি দেয় এটা সত্য। তবে তারা কাজ করতে গিয়ে নিশ্চিত করেন।

চাটখিল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ ফিরোজ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, এই চক্রের বিরুদ্ধে থানায় এবং আদালতে নানা অভিযোগ জমা পড়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন