বৃহস্পতিবার, ১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩রা পৌষ, ১৪৩২

ইউরোপে আশ্রয় পাওয়া কঠিন করছে বাংলাদেশিদের জন্য, ইইউ পার্লামেন্টে কঠোর প্রস্তাব অনুমোদন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইনপ্রণেতারা অভিবাসন নীতিকে আরো কঠোর করার পক্ষে মত প্রকাশ করে বাংলাদেশের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার পথ আরও সংকুচিত করে তুলছেন। বুধবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে, যা এই সঙ্কটকে আরও গভীর করে তুলতে পারে। ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী আইনপ্রণেতাদের সমর্থনে পাস হওয়া এই প্রস্তাবের ফলে বাংলাদেশসহ নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য ইউরো ব্লকে আশ্রয়ের আবেদন অনেক বেশি জটিল এবং কঠোর হয়ে উঠবে।

প্রস্তাবের একটির মধ্যে বলা হয়েছে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এমন কিছু দেশকে তালিকা করবে যেগুলিকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে মানা হবে। এই তালিকায় বাংলাদেশের পাশাপাশি কোসোভো, কলম্বিয়া, মিসর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিশিয়ার নাম রয়েছে। এ মানদণ্ড অনুযায়ী, এইসব দেশের নাগরিকরা যদি আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তবে তাদের আবেদন মঞ্জুরের প্রক্রিয়া আরও কঠোর ও জটিল হয়ে উঠবে।

অপর একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীদের এখন থেকে তৃতীয় দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। বিশেষ করে যদি কেউ ‘নিরাপদ’ তালিকাভুক্ত দেশ থেকে হয়, তাদের অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে। এই পদক্ষেপকে কট্টর ডানপন্থী আইনপ্রণেতা ফ্যাব্রিস লেগেরি গুরুত্বপূর্ণ বলেছেন, যাতে ভিত্তিহীন আশ্রয়প্রেম ও চাপ কমানো সম্ভব হয়। অন্যদিকে, বামপন্থী আইনপ্রণেতা ড্যামিয়েন কারেমে একে বলে দিয়েছেন, এটি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির জন্য ‘বড়দিনের উপহার’, কারণ এর ফলে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী আশ্রয়প্রার্থীদের আলবেনিয়ায় পাঠানোর রাস্তায় আরও অড়বাধা দৌড়াতে পারে।

এদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই নতুন পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে বলেছে যে, তৃতীয় দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানো হলে তারা গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারেন। ইউরোপীয় কমিশন দাবি করেছে, আশ্রয়প্রার্থীদের যেখানেই পাঠানো হোক না কেন, সেই দেশের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। উল্লেখ্য, গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয়ের জন্য আবেদন জানিয়েছিল, যার মধ্যে ৪ লাখ ৪০ হাজারের মতো লোককে নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। তবে এই নতুন সিদ্ধান্তে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আশার আলো কমে আসার পাশাপাশি তাদের জন্য ঝুঁকি আরও বেড়ে যেতে পারে।

পোস্টটি শেয়ার করুন