মঙ্গলবার, ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮ই পৌষ, ১৪৩২

ইসরায়েল পশ্চিম তীরে ১৯টি নতুন বসতির অনুমোদন দিল

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে আরও ১৯টি নতুন ইহুদি বসতি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। এই সিদ্ধান্তের ফলে গত তিন বছরে অনুমোদিত বসতির মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৯টিতে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচের দপ্তর থেকে জানানো হয়, জেরুসালেমি অঞ্চলে ‘জুডিয়া ও সামারিয়া’ এলাকায় এই ১৯টি নতুন বসতি ঘোষণা ও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের কবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়টি বিবৃতিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। স্মোট্রিচ বলেছেন, আমাদের কল্যাণে, আমরা একটি ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা রুখে দিচ্ছি। আমাদের ঐতিহ্যবাহী ভূমিতে উন্নয়ন, নির্মাণ ও বসতি স্থাপনের এই কাজে আমরা অবিচল থাকবো, কারণ আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের জমি ও ইতিহাসের প্রতি বিশ্বাসী। এই সিদ্ধান্তের সময় জোড়ে এসেছে যখন আন্তর্জাতিক মহলে পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেক দেশ ও সংস্থা এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে, কারণ এটি ফিলিস্তিনিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জমি ও যোগ্যতা ক্ষুণ্ণ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি অভিযানের ভয়াবহতা এখনও তাজা। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এখনও সারি সারি লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। সর্বশেষ, মধ্য গাজা সিটির ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৯৪ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য আল-শিফা মেডিকেল কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তীতে দাফনের জন্য দেইর আল-বালাহ’র শহীদ কবরস্থানে নেওয়া হবে। ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ৭০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৭১ হাজার ১০০ জন। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও প্রতিদিনই হামলা বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সাধারণ বাসিন্দা। শিক্ষায়, এই সংঘর্ষের কারণে গাজা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ধ্বংস হয়ে গেছে। দুই বছর ধরে অব্যাহত সংঘটনের ফলে বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। বর্তমানে গাজার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দৃশ্যত অর্ধপোড়া অবস্থা থেকে পুনরায় চালু হতে শুরু করেছে, যদিও রাস্তায় ও ক্লাসে দেখা যায় অস্ত্রের ছায়া। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা বেঁচে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত। ইউনেস্কোর তথ্যমতে, গাজায় ২০২৩ সালে সংঘর্ষের ফলে অন্তত ১৩৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে, আরও বহু স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত। এই সংঘর্ষের ফলে শিক্ষাবিদ, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গাজায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে শিক্ষার ভবিষ্যত। এখনও সেখানে বিদ্যুৎ ও সরঞ্জামের সংকট রয়েছে, তবে শিক্ষার্থীরা অস্থায়ীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন