বৃহস্পতিবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০ই পৌষ, ১৪৩২

অভূতপূর্ব জনসভায় তারেক রহমানই আসছেন ঢাকায়

কবিগুরুর প্রিয় ভাষায় বললে, আজ দেশের মানুষজনের সম্মিলিত মহাকণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে, ‘ভেঙেছ দুয়ার, এসেছ জ্যোতির্ময়, তোমারি হউক জয়’। হ্যাঁ, এসব শব্দের মধ্য দিয়ে বোঝা যায় কেনই বা কোটি বাংলার হৃদয়ে আবেগের আগুন জ্বলছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর), বাংলাদেশের প্রিয় মাতৃভূমিতে পা রাখতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে দীর্ঘতর নির্বাসিত জীবন শেষে দেশে ফিরছেন তিনি, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই সময়ের অপেক্ষায় ছিল দেশের মানুষ, প্রত্যাশা ছিল দেশের সমগ্র জনগণের জন্য। তারেক রহমানের এই ফিরে আসা যেন দেশের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশের প্রানের স্পন্দন আবার শুরু হলো।

আজ সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সম্ভাব্য দৃষ্টিপথ হবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পূর্বাচলের বিশাল মঞ্চের দিকে। বিএনপি এই প্রত্যাবর্তনে একত্রিত করতে প্রস্তুত, লাখো নেতাকর্মী তাদের প্রিয় নেতাকে স্বাগত জানাতে ঢাকামুখী হচ্ছে। দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ; যেন আজ একটি ঐতিহাসিক দিন, যেখানে দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে।

বিশ্লেষক ও দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন নতুন রাজনৈতিক যুগের সূচনা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পরে পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই ঘটনা দলের মনোবল আরো বৃদ্ধি করেছে। অনেকের মতে, এটি দেশের অস্থির পরিস্থিতিতে জনগণের ঐক্য ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠার এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। তারেক রহমানের এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধু ব্যক্তিগত ঘটনা নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের গভীর প্রত্যাশার প্রতীক। এজন্যই দেশজুড়ে অঙ্গনে, নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ মধ্যে এক গােল আবেগের সঞ্চার ঘটছে।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখো নেতাকর্মী এখন ঢাকায় আসার জন্য ব্যস্ত। বাস, ট্রেন, লঞ্চ কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় তারা সবাই স্বপ্রনোদিত হয়ে রাজধানী শহরে প্রবেশ করছেন। গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসা শুরু করেছেন। প্রবেশপথগুলোতে দেখা যাচ্ছে ব্যাপক আন্দোলন এবং উজ্জ্বল আনো নেওয়া নেতাকর্মীদের। বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চল থেকেও জানিয়েছেন তারা দীর্ঘ ১৭ বছর এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছেন। কেউ বলছেন, প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে এই প্রস্তুতি।

এদিকে, দেশের বাইরে থেকেও হাজার হাজার প্রবাসী তাদের প্রিয় নেতা বিকেলের তারেক রহমানের স্বাগত জানাতে জড়ো হয়েছেন। যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে থেকেও অসংখ্য নেতাকর্মী ঢাকায় এসে যোগ দিয়েছেন।

প্রথম তিন দিন তারেক রহমান দেশে ফেরার পর কী করবেন, তা নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা করেছেন বিএনপি নেতারা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, তিনি আজ দুপুরে বিমানবন্দরে নামার পর দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা তাকে স্বাগত জানাবেন। এরপর তিনি জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে এবং ৩০০ ফিট রাস্তার সংবর্ধনাস্থলে উপস্থিত হবেন। সেখান থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বক্তব্য দেবেন, যেখানে লাখো মানুষের সমাগম হবে। পরের দিন, অর্থাৎ ২৬ ডিসেম্বর, জুমার নামাজের পর তিনি রাজধানীর গুলশানের বাসভবনে ফিরে যাবেন। ওই দিন তিনি প্রথমে জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করবেন, এরপর সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে দেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। পাশাপাশি ২৭ ডিসেম্বর তিনি নাগরিক সনদপত্রের কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন, ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ ওসমান হাদীর কবর জিয়ারত করবেন।

সেই দিন, তারেক রহমানের সাথে সঙ্গে থাকবেন দেশবাসী। শহীদ ওসমান হাদীর কবর জিয়ারতের পর তিনি শ্যামলী এলাকায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মার্চে আহত ব্যক্তিদের দেখতে যাবেন।

সর্বোপরি, এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় ব্যাপক সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর ফলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এবং পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দলীয় নেতা ও ডাক্তাররা জানিয়েছেন, ঢাকায় অন্তত ২৫-৩০টি মোবাইল অ্যাম্বুলেন্স, তিনটি মেডিকেল বুথ স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে।

বিশুদ্ধ পানির জন্য সরকার ও বিএনপির উদ্যোগে কিলো-কিলো বোতল পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফিরে আসার এ দিনে প্রচুর মানুষের সমাগম হবে। এজন্য তিনি কয়েক হাজার বোতল পানির ব্যবস্থা করেছেন এবং তার ফটো সংযুক্ত করা হয়েছে বোতলে।

সংগঠনের প্রস্তুতি হিসেবে, বিএনপি পূর্বাচলে বিশাল এক সংবর্ধনা মঞ্চ তৈরি করেছে। এই মহামঞ্চ এক্সপ্রেসওয়ে ও আশেপাশের এলাকায় নির্মাণ শেষ হয়েছে। জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যেই এই অনুষ্ঠানের জন্য আনুষ্ঠানিক অনুমতি দিয়েছে।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, এই অনুষ্ঠানে প্রায় অর্ধেক মিলিয়ন মানুষ অংশ নেবে। পুরো এলাকায় মাইক সেটআপ, ড্রোন ও সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি থাকবে। দলের স্বেচ্ছাসেবকদের উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে।

অত demikian, বিএনপির নেতারা মনে করেন, তারেক রহমানের এই ফিরা দেশের গণতন্ত্র ও তরুণ প্রজন্মের জন্য এক নতুন সূচনা। তারা আশা করছেন, এই মহতী দিনটি শান্তিপূর্ণ এবং সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হবে, যাতে দেশের গণতান্ত্রিক পতাকা আবার উড়ছে। পুরো দেশে নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে ঢাকার মহানগর পুলিশ ও জেলা প্রশাসন নানা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন