খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক শক্তির বিভাগীয় আহ্বায়ক মোতালেব শিকদারকে গুলি করার ঘটনা নিয়ে র্যাব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছে। র্যাব-৬ জানিয়েছে, এই হামলার পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়; মূল কারণ হলো মাদক ব্যবসা ও লুণ্ঠিত মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনার র্যাব-৬ সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন উপ-অধিনায়ক মেজর মো. নাজমুল ইসলাম। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শামীম শিকদার ওরফে ঢাকাইয়া শামীমসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, ২২ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা এলাকার ‘মুক্তা হাউস’ নামে একটি ফ্ল্যাটে মোতালেব শিকদারকে মাথায় গুলি করে হত্যা চেষ্টা করা হয়। গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামি শামীম প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে যে, ওই ফ্ল্যাটটি জাতীয় যুবশক্তির নেত্রী তানিমা তন্বীর বাসা হলেও সেখান থেকে মাদক ও অসামাজিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ঘটনার দিন সকালে মোতালেবের কাছে থাকা মাদক বা তার টাকা নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্বে ক্ষিপ্ত হয়ে শামীম তার কাছে থাকা অস্ত্র দিয়ে মোতালেবের মাথায় গুলি চালায়। তবে গুলিটি সরাসরি মগজে না ঢুকে যাওয়ায় মোতালেব প্রাণে বেঁচে যান।
র্যাব জানিয়েছে, শামীম শিকদার এলাকায় একাধিক মামলা দিয়ে চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই মাদক, দস্যুতা এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়াও, এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার সন্দেহে মো. আরিফ, মাহাদিন ও ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া তানিমা তন্বীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ, প্রযুক্তির সহায়তা এবং তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ঘটনার সময় ওই ফ্ল্যাটে আরও কেউ উপস্থিত ছিলেন, যারা নিয়মিত মাদক সেবন ও বিক্রয় করতেন।
অপরদিকে, মোতালেব শিকদারকে হত্যাচেষ্টার এই মামলাটির তদন্ত চালাচ্ছে ডিবি পুলিশ। ওসি তৈয়মুর ইসলাম জানান, মূল অস্ত্রটি উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে এবং গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বাকি অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। প্রথমে এই ঘটনাকে রাজনৈতিক হামলা বলে ধারণা করা হলেও, তদন্তে দেখা গেছে এর মূল কারণ মাদক কারবার। মোতালেবের স্ত্রী, ফাহিমা আক্তার, ২৩ ডিসেম্বর সোনাডাঙ্গা থানায় এই মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে পুরো এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে, অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে কাজ চলছে।





