নড়াইলের কৃতিসন্তান কবি বিপুল বিশ্বাসের ৫৬তম জন্মদিন উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা হয়েছিল নানা সুখ-স্মৃতি ও গুণমুগ্ধের কানাকানি। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সদর উপজেলার নলদীরচর গ্রামে অবস্থিত চন্দ্রাকুঞ্জ রিসোর্টে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই দিনটিতে কবি বিপুল বিশ্বাসের কবিতা আবৃতি, সাহিত্য আলোচনা, প্রবন্ধ পাঠ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল উৎসবের নানা রূপ।
বিখ্যাত গায়ের কবি হিসেবে পরিচিত বিপুল বিশ্বাসের বাড়ি নড়াইল সদর উপজেলার কলোড়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রামে। তিনি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে, এখন পর্যন্ত তিনটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে।
জন্মদিনের অংশ হিসেবে, কবি বিপুল বিশ্বাসের প্রবন্ধ রচনা ও পাঠ করেন মাগুরা বেরইল নাজির আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ধ্রুব কুমার দাম। এছাড়াও, কবির সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন মাবিয়া খানম।
আলোচনা ও আরও উদ্দীপনা বাড়াতে এই বিশেষ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বিখ্যাত আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণিতে প্রথম স্থানে থাকা মেধাবী পড়ুয়াদের সম্মাননা প্রদান করা হয়। এই সম্মাননার মধ্যে রয়েছে স্মারক ও উপহার। তাছাড়া বেসরকারি সংস্থা সেতুবন্ধন ফাউন্ডেশন কবিকেও সম্মাননা স্মারক প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (উপসচিব) মো. আছাদুজ্জামান। তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও তরুণ প্রজন্মের মেধাকে উৎসাহিত করে বলেন, “অপরের দিকে তাকিয়ে হিংসা বা ঈর্ষা না করে, নিজের উন্নতিতে মনোযোগ দিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা বই পড়ার পরিবর্তে মোবাইলে বেশি সময় কাটায় যা দুঃখজনক।”
বিশেষ অতিথিদের মধ্যে ছিলেন জেলা কালচারাল কর্মকর্তা আবদুল রাকিবিল বারী, চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারী, অ্যাডভোকেট রমা রানি রায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তন্দ্রা মুখার্জি, জেলা শিক্ষা অফিসের গবেষণা কর্মকর্তা বিকাশ কুসুম চক্রবর্তী, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রবীন্দ্রনাথ অধিকারী এবং নড়াইল কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক কবি উজির আলী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন খুলনা সরকারি ব্রজলাল কলেজের ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ইকবাল হোসেন।
নড়াইল কবিতা আসর পরিচালনা করেন এসকে সরকার, যিনি সঞ্চালনা করেন স্বাগত বক্তব্যে। উপস্থিত ছিলেন আগদিয়া-শিমুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আহাদ আলী মোল্যা ও কবি বিপুল বিশ্বাসের শুভেচ্ছা উপস্থাপন করেন।
প্রধান অতিথি আছাদুজ্জামান বলেন, ‘সফলতার জন্য অন্যের তুলনায় নিজেকে উন্নত করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। প্রতিযোগিতার মতো নয়, নিজের পারফরম্যান্সের দিকে মনোযোগ দিলে সত্যিই উন্নতি সম্ভব।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আজকের তরুণ প্রজন্ম বই থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, তাদের মনোযোগ খেলাধুলা ও মোবাইলের মতো প্রযুক্তির দিকেও যথাযথভাবে দিতে হবে।’





