তাইওয়ানকে ঘিরে ব্যাপক আকারে সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। এই মহড়ায় দ্বীপটির গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল দখল ও অবরোধের অনুশীলন করা হচ্ছে এবং এতে বোঝানো হচ্ছে যে, তারা বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কতা জারি করছে বলে বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এ খবর নিশ্চিত করেছে বিবিসি।
মহড়া নামকরণ করা হয়েছে ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ এবং এতে চীনের সেনা, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সঙ্গে রকেট ফোর্স অংশ নিচ্ছে। মহড়ার সময় সরাসরি গোলাবর্ষণ ও বিভিন্ন রণনীতি অনুশীলন করা হচ্ছে। এই মহড়া শুরু হওয়ার পরই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা করেছে যে, তারা তাইওয়ানের জন্য ১১ বিলিয়ন ডলারের বৃহৎ অস্ত্র বিক্রির চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং পিছু হটেনি; তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।
চীন মনে করে যে, তাইওয়ান তাদের ভূখণ্ডের অংশ। এদিকে, তাইওয়ান এই বছরের অবকাঠামো শক্তিশালী করার উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে, যা বেইজিংয়ের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় এই সামরিক মহড়াকে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে দেখেছে। তারা জানিয়েছে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে দ্বীপের আশপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও জাহাজ শনাক্ত করেছে। ফলে, তারা মহড়ার কারণে নিজেদের সেনা ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সতর্ক অবস্থানে রেখেছে।
চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এই মহড়াকে ‘ন্যায়ের সুরক্ষা’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। সেখানে এক পোস্টে বলা হয়, যারা স্বাধীনের বিপক্ষে ষড়যন্ত্র করছে, তারা এই ঢালের মুখে ধ্বংস হয়ে যাবে। পাশাপাশি, চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মহড়াকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির জন্য কঠোর শাস্তি বলে ঘোষণা করে, যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক শক্তির হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেছেন, তারা শান্তি বজায় রাখতে চান এবং বর্তমান অবস্থা শক্তিশালী রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে, তিনি আরও বলেন, শান্তি রক্ষা করতে হলে কঠোর আভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, ২০২২ সালের পর থেকে তাইওয়ানের প্রণালীতে চীন নিয়মিত সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এই সামান্য মহড়া, যা ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নতুন প্রধান ইয়াং ঝিবিন দায়িত্ব নেওয়ার পর শুরু হলো, তা অঞ্চলের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। একই সঙ্গে, তাইওয়ানও তাদের নিজস্ব সামরিক মহড়া চালিয়ে প্রতিরক্ষা জোরদার করছে যা দ্বীপের পরিস্থিতি আরও অস্থির করে তুলছে।





