সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া নিশ্চিত করেছেন যে দখল হওয়া খালগুলো আবারও নতুন করে উদ্ধার ও সংরক্ষণের মাধ্যমে পরিকল্পিত উন্নয়ন সম্ভব। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এই সভায় কামারখালসহ সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন খাল পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসরণে করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় উপস্থিত সবাই প্রশাসনের প্রতি খাল উদ্ধারে সহযোগিতা করার অঙ্গীকার করেন।
বেলার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদার নেতৃত্বে পরিচালিত ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি, নারী প্রতিনিধি, বিশিষ্টজন ও অন্যান্য পেশাজীবী। উপস্থিত বক্তারা মূলত খাল উদ্ধারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও পরামর্শ প্রদান করেন। উল্লেখযোগ্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, হুটহাট দখলদারিত্ব না করে উপযুক্ত পরিকল্পনা তৈরির, দখলদারদের শাস্তির ব্যবস্থা, খালের সীমানা চিহ্নিতকরণ, পান্ডারখাল ও অন্য খালগুলোর উৎসমুখ পুনরুদ্ধার, নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, পৌরসভা অনুমোদনের সময় খাল বা জলাধার সংক্রান্ত বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পরীক্ষা, ও বর্ধিত সৌন্দর্য্যবর্ধনের জন্য ব্লক দিয়ে তীর সংরক্ষণ ও ওয়াকওয়ে নির্মাণের ব্যাপার নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় সুজনের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দী, পৌরপ্রশাসক ও ডিডিএলজি অসীম কুমার বণিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৃজন সরকার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক সহ অন্যান্য বিশিষ্টজনের বক্তব্য রাখেন।
বেলা পক্ষ থেকে আটটি প্রধান দাবি উত্থাপিত হয়, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: উত্তরা আরপিননগর থেকে জাওয়ার পয়েন্ট পর্যন্ত কামারখাল এর সীমানা পুননির্ধারণ ও পুনরুদ্ধার, অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে দ্রুত উচ্ছেদ, খাল দুটির তীর সংরক্ষণ, জলাশয়সমূহে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দূষণমুক্ত রাখতে ব্যবস্থা, গণ-শৌচাগার অপসারণ, বিভিন্ন জলাশয় সংস্কার এবং সংরক্ষণের পাশাপাশি আদালতের নির্দেশনা অনুসারে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির গুরুত্ব।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আরও বলেন, বৃষ্টির সময় পানি বাড়ে এবং এই সমস্যা সমাধানে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, দ্রুতই একটি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যাতে পানি বৃদ্ধির সমস্যা মোকাবিলা ও খালগুলো সংরক্ষণ করা যায়। মাননীয় পরিবেশ উপদেষ্টাও সুনামগঞ্জে এসে ফসল রক্ষা বাঁধের পর অন্যতম গুরুত্বের সঙ্গে পাঁচটি খালের উন্নয়নে মনোযোগ দিয়েছেন, এ জন্য প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।





