শুক্রবার, ২২শে আগস্ট, ২০২৫, ৭ই ভাদ্র, ১৪৩২

হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’ হয়েছি: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলার অভিযোগের সরাসরি মোকাবিলা করে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে ‘বলির পাঁঠা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এই মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজানো। ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের সাথে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

৪২ বছর বয়সী এই লেবার পার্টির নেত্রী জানিয়েছেন, তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন, ঢাকার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তার নামে ও আরও ২০ জনের নামে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মামলার শুনানি আগামী ১১ আগস্ট तय করা হয়েছে। তবে টিউলিপ এখনো কোন আনুষ্ঠানিক সমন পাননি এবং অভিযোগপত্র দেখাও পাননি বলে জানিয়েছেন। তার ভাষ্য, ‘আমি যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মধ্যে আটকা পড়েছি, যেখানে বিচার শুরু হবে কিন্তু আমি জানি না আমার বিরুদ্ধে আসল অভিযোগ কী।’

বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য এর মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায়, তার অনুপস্থিতিতেও বিচার কার্যক্রম চলতে পারে।

টিউলিপ উল্লেখ করেছেন, গত বছর জুলাইয়ে ব্রিটিশ লেবার পার্টির নির্বাচনী জয় লাভের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তখন তিনি কাজ উপভোগ করছিলেন। তবে একই সময়ে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের কারণে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ঘটনা ঘটে। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে ক্ষমতা আসার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে।

প্রথমত, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে, যা তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। এরপর ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগও ওঠে, যা তিনি ব্যাখ্যা করেছেন।

নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য কারো মালিকানাধীন বাড়িতে থাকার বিষয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। তবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার জন্য স্বতন্ত্র উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস তার আর্থিক বিষয়াদি পর্যবেক্ষণ করে অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়েছেন।

টিউলিপ আরও অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের ক্ষমতা বদলের পরে ‘নোংরা রাজনীতি’ তার ওপর চাপানো হয়েছে। তার কথায়, ‘এটি মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলাফল, আর আমি এর বলি হয়েছি। বাংলাদেশে যারা অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই।’

পোস্টটি শেয়ার করুন