বৃহস্পতিবার, ২১শে আগস্ট, ২০২৫, ৬ই ভাদ্র, ১৪৩২

হাসিনা-ইউনূস দ্বন্দ্বে আমি ‘বলির পাঁঠা’ হয়েছি: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর নিজেকে ‘বলির পাঁঠা’ বলে দাবি করেছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ও প্রাক্তন ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, মামলাটি সম্পূর্ণ অমূল্য এবং তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। এই আলোচনায় তিনি উল্লেখ করেন, তিনি যদি বাংলাদেশের রাজনীতি বা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হন, তাহলে এই অভিযোগগুলো সত্য হতে পারত, কিন্তু এখন তিনি মনে করেন এর পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে।

৪২ বছর বয়সি এই লেবার পার্টির নেত্রী জানান, তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন যে, ঢাকার পূর্বাচলে জমি বরাদ্দে প্রভাব খাটানোর অভিযোগে তার ও আরও ২০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মামলার শুনানি হয় ১১ আগস্ট ধার্য হলেও, তিনি এখনও কোনও সমন পাননি এবং অভিযোগপত্রও দেখেননি। তিনি বলেন, ‘আমি যেন এক অদ্ভুত দুঃস্বপ্নের মধ্যে আছি, যেখানে বিচার শুরু হচ্ছে কিন্তু আমি জানি না আসল অভিযোগ কী’।

বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনও প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায়, তার অনুপস্থিতিতেও যেন যেন বিচার সম্ভব হতে পারে।

টিউলিপ জানিয়েছেন, গত বছর জুলাইয়ে লেবার পার্টির নির্বাচনী জয় লাভের পর তিনি অর্থনৈতিক সচিব ও সিটি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। তখন তিনি তার কাজে মনোযোগী ছিলেন। তবে, পাশাপাশি বাংলাদেশে ছাত্র সমাজের নেতৃত্বে বিক্ষোভের কারণে শেখ হাসিনার সরকার পতনের ঘটনা ঘটে। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর, বাংলাদেশে বিএনপি ও হেফাজতসহ নানা দলীয় ধাপে ধাপে তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ উঠতে থাকে।

প্রথমে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রাশিয়ার সাথে চুক্তি থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে, যেকারণে তিনি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন। এরপর, ২০০৪ সালে লন্ডনের কিংস ক্রসে একটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগও উঠে আসে, যা তিনি ব্যাখ্যা করেন।

নিরাপত্তাজনিত কারণে অন্য কারো মালিকানাধীন বাড়িতে থাকার বিষয়েও সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তবে, যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীদের নীতিগত আচরণবিধি পর্যালোচনার জন্য স্বতন্ত্র উপদেষ্টা স্যারের তদন্তে তিনি নির্দোষ বলে পরিচিত হন।

টিউলিপ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলে তার ওপর ‘নোংরা রাজনীতি’ চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটি মুহাম্মদ ইউনূস ও আমার খালা শেখ হাসিনার মধ্যে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলাফল, আমি এর বলি হয়েছি। বাংলাদেশে যারা অপরাধ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া উচিত, কিন্তু আমি তাদের মধ্যে নই’।’

পোস্টটি শেয়ার করুন