শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪, ৬ই পৌষ, ১৪৩১

চারমাস অপেক্ষার অবসান ঘটল সানজিদার, ভারতে সাবিনা

চার মাস আগে কলকাতার ইমামি ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব থেকে আমন্ত্রণ এসেছিল বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবলের খেলোয়াড় সানজিদা আক্তার ভারতীয় লিগে খেলবেন কিনা। অনেক দূর এগিয়ে ছিল আলোচনা। কিন্তু বাফুফে অনুমতি না দেওয়ায় সানজিদা খেলতে যেতে পারেননি। গতকাল বাফুফে জানায়, আনুষ্ঠানিকভাবে সানজিদা ভারতের নারী লিগে খেলবেন।

গতকাল সকালেই ভারতে খেলতে চলে গেছেন নারী জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তিনি খেলবেন কর্নাটকের কিকস্টার্ট ক্লাবে। সানজিদা জানিয়েছেন, তার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের। এখন ভিসা সম্পন্ন হলে ঢাকা ছাড়বেন তিনি।

বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা ভারতের নারী লিগে খেলার আমন্ত্রণ পেলেও তারা খেলতে যেতে পারছিল না। বাফুফে অনুমতি দিচ্ছিল না। সাবিনারা খেলতে যেতে পারলে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে। সেটা বুঝেন এবং অনুভব করেন। কিন্তু পথ খুলে দিতে রাজি না কর্মকর্তারা। সাবিনা সুযোগ পেয়েই সেটা লুফে নিয়ে অনুমতি আদায় করে নিয়েছেন।

ভারতে খেলতে যাবেন সেই সুযোগ তিনি হারাতে চান না। অনুশীলন আর অনুশীলন করেই ঘরবন্দি থাকতে রাজি না। নারী ফুটবল ক্যাম্পের খেলোয়াড়দের মধ্যে এসব নিয়ে নানা চাপা ক্ষোভ ছিল। আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজন করতে গিয়ে, হচ্ছে তো হচ্ছে না। অনেক দিন পর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচ। ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল হওয়ার কথা সেটিও আয়োজন করতে পারেনি। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট দায়িত্ব নিয়েছিল, তারা নারী খেলোয়াড়দের নিয়ে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ আয়োজন করতে পারেনি। সাড়ম্বরে ঘোষণা দিয়েই সব শেষ।

বাফুফের নারী ফুটবল কমিটিও সেটা নিয়ে নতুন কোনো উদ্যোগের কথা জানাতে পারেনি। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান পিছিয়ে গিয়েছিল। মাস গড়িয়ে যায়, বছরও শেষ হয়ে গেল। কবে হবে ফ্রাঞ্চাইজি ফুটবল, কবে হবে নারী ফুটবল লিগ। এসব নিয়ে নারী ফুটবলারদের মধ্যে হতাশা। তাদের কথা নিজেদের লিগের খবর নেই। দেশের বাইরে খেলতে যাওয়ার সুযোগ আসলে সেটিও গ্রহণ করা যায় না। ওরা প্রশ্ন করেন, ‘শুধু অনুশীলন করো, জিম করো, রিকভারি করো আর ক্যাম্পে খাও-দাও ঘুমাও। এসব করলেই কী হবে।’ সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দেশের নারী ফুটবলে নতুন বাঁক নেওয়ার পরিকল্পনা করা যেত, সেটি হয়নি।

সাবিনা, মারিয়া, সানজিদা, মনিকাদের উন্নত দেশে খেলার সুযোগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করা যেত। কিন্তু বাফুফের নারী ফুটবল কমিটি থেকে সে সব উদ্যোগ নেওয়া হয় না। নারী ফুটবলাররা বলেন, ‘আমরা কীভাবে কথা বলব। কোথায় কথা বলব সেটাও জানি না। সাফের বাইরে যে সব দেশে নারী ফুটবলে খেলার সুযোগ রয়েছে সেগুলো যদি কাজে লাগানো যায় তাহলে আমাদের দক্ষতা বাড়বে। এখন কথা হচ্ছে বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগটা করবে কে।’ এই সব ফুটবলার হতাশ হয়ে বলেছেন আঁখি চলে গেছেন। বিয়ে করেছেন। স্বপ্না চলে গেছেন, বিয়ে করেছেন। ভবিষ্যতে আরো ফুটবলার চলে যাবেন। ধারাবাহিকভাবে খেলার ব্যবস্থা না থাকলেও বিয়ে না করে উপায় কী। একটা খেলা শেষ হলে আরেকটা খেলার জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে হয়।’

সাবিনা-সানজিদা খুশি, তারা দেশের বাইরে ক্লাব ফুটবলে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। মেয়েরা বাইরে খেলতে যেতে পারতেন না। এবার একটা জট লেগেছিল। মূলত সাবিনা অনুমতি পাওয়ায় জট খুলেছে এবং সানজিদার পথও খুলেছে।

গতকাল কলকাতা থেকে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার ইন্দ্রানী সরকার জানিয়েছেন, সানজিদার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। পেপারস সাইন করে পাঠিয়েছে। ভিসা হয়ে গেলে ও আসতে পারবে।’

পোস্টটি শেয়ার করুন